সর্বশেষ সংবাদ :

শতাধিক বিঘার সরিষা ক্ষেত মাড়িয়ে বসছে মেলা

নিয়ামতপুর প্রতিনিধি: চারিদিকে হলুদ হলুদ আর হলুদ। যে দিকে তাকানো হয়, শুধু চোখ জুড়িয়ে যায়। আর কিছুদিন পর কৃষকের ঘরে উঠবে সরিষা। কৃষকরা অনেক আশা করে সরিষার আবাদ করেছে। এতে কৃষক যেমন লাভবান হবে, ঠিক তেমনি দেশে ভোজ্যতেল সরিষার চাহিদা মিটবে। অথচ সেই সরিষার শত শত বিঘা নষ্ট করে একটি মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মেলা করার প্রস্তৃতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় ও মন্দিরের উন্নয়নকল্পে বহু বছর থেকে গুজিশহর প্রেম গোসাই মেলা হয়ে আসছে। এক সময় মেলার আয় থেকে বিদ্যালয় ও মন্দিরের উন্নয়ন হলেও এখন আর তা হয় না। মেলার আয় চলে যায় একটি স্বার্থনেষী মহলের পকেটে। আর মেলার ঐহিত্য এখন আর সেই আগের মতো নেই। এখন মেলা বাণিজ্যিক, তাতে বসে নোংরামির আখড়া।
আগে মেলার জায়গা আমন ধান কাটার পর ফাঁকা থাকলেও এবার সেই জায়গায় শত শত বিঘা সরিষার আবাদ হয়েছে। অথচ সেই স্বার্থনেষী মহল কৃষকদের মতের বিরুদ্ধে সরিষার আবাদ নষ্ট করে মেলা করা প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ঘোষকুড়া গ্রামের কৃষক মোসলেম আলী জানান, আমি ২ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। খুব সুন্দর হয়েছে। ফুল ফুটেছে। কিছু দিন পর সরিষা ঘরে তুলতে পারবো। অথচ সেই আবাদ নষ্ট করে মেলার প্রস্তুতি নিচেছ। আমরা বাধা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোন কথাই শুনছে না। প্রতিকার চাইবো কার কাছে।
ঘোষকুড়া গ্রামের আরেক কৃষক মুকুল বলেন, আমি ৫ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। আমার সরিষাও নষ্ট করে তারা মেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন মেলা করতে হবে। একসময় মেলার আয় দিয়ে বিদ্যালয়ের ও মন্দিরের উন্নয়ন হতো। এখন তো সরকার সব দেয়।
তারপরও কেন মেলা করতে হবে। মেলায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। শুধু সরিষার আবাদ না, মেলায় জুয়া, অশ্লীল নাচ-গান এর কারণে এলাকার অনেক যুবক নষ্ট হয়ে যায়।
একই গ্রামের আরেক কৃষক সেলিম বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। যাতে আমাদের সরিষার আবাদ নষ্ট না হয়। দেখি প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহন করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান বলেন, কৃষকরা আমার কাছে একটি আবেদন দিয়েছে। আমি মেলা কর্তৃপক্ষকে বলেছি ফসলের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেভাবে মেলার আয়োজন করতে। গত ৩১ ডিসেম্বর খাদ্যমন্ত্রী মহোদয়ের উপস্থিতিতে একটি মিটিং এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কর্তৃপক্ষ আশ^াস দিয়েছে সরিষার আবাদ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেই মেলার আয়োজন করবে।
এ বিষয়ে মেলা কমিটির সদস্য সচিব গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল আমীন বলেন, ফসলের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহন করবো। সরিষার জমি নেট দিয়ে ঘিরে দিবো। সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে। জমির মালিক স্বেচ্ছায় সেসব জমি দিয়েছে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ | সময়: ৪:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ