বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে নজরদারি জোরদার, সতর্কতা অনলাইনেও

সানশাইন ডেস্ক: রাজধানীতে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং তাদের গোয়েন্দা ইউনিটগুলোর ব্যাপক নজরদারি চলমান রয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সাইবার ওয়ার্ল্ডে নজরদারি। আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন এলাকায় চালানো হচ্ছে অভিযান। এসব অভিযানে গ্রেফতারও হচ্ছেন অনেকে। অনলাইনে অপপ্রচার কিংবা গুজব ছড়িয়ে কেউ যেন কোনও ধরনের স্বার্থ হাসিল করতে না পারে সে বিষয়েও তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে—১০ তারিখের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন মামলায় জামিনে থাকা নেতাকর্মীদের পুরনো মামলায় গ্রেফতার করছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারেও তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে নয়া পল্টনে প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশটি করার অনুমতি চাওয়া হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেশ কয়েকটি শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। যদিও এখন পর্যন্ত প্রধান কার্যালয়ের সামনে নয়া পল্টনেই সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় বিএনপি। তারপরও পুলিশের সাথে সমাবেশস্থল নিয়ে আলোচনা চলছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, কোনও অসাধুচক্র কিংবা তৃতীয় পক্ষ যেন কোনও ধরনের সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের ক্রাইম বিভাগ এবং গোয়েন্দা বিভাগ মাঠে রয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর। নেতিবাচক কিছু যেনও কেউ না ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপর রয়েছে। সমাবেশ উপলক্ষে পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিট, স্পেশাল ফোর্স, স্পেশাল ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টার ইউনিটসহ সব ব্যাটালিয়নকে প্রস্তুত রেখা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ কোনও ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনায় রয়েছে কিনা সেসব খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সংগ্রহ করা হচ্ছে আগাম গোয়েন্দা তথ্য। হোটেল রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জায়গাগুলো তল্লাশি করা হচ্ছে এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেখানে কাদের আনাগোনা। কেউ যদি কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা কিংবা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকে তাকে পুলিশ আটক করবে।
গত এক ডিসেম্বর থেকে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযান চলমান। রাজধানীসহ সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে মামলা রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অভিযানের নামে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির। জামিনে থাকার পরও বিভিন্ন পুরনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে দাবি দলটির। এ প্রেক্ষিতে ডিএমপিসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে দেখা করে এসব বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করার চেষ্টা করছেন দলটির বিভিন্ন নেতা।
ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বত্র নজরদারি বাড়িয়েছে। সমাবেশটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিএনপি’র ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাঘাত যেন কেউ না ঘটাতে পারে এবং কোনও ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা রুখতে সাইবার ওয়ার্ল্ডে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে র‌্যাব সদস্য। সাইবার ওয়ার্ল্ডে কেউ উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিনা সে বিষয়টিও নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনও উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২২ | সময়: ৫:২১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ