শেষ বিকেলের রোমাঞ্চে পাকিস্তানকে হারাল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক: রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিনেই চমকে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বেরিয়ে এসে রেকর্ডের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে জবাবটাও ঠিকঠাক দিয়েছে পাকিস্তান। তাতে একটা সময় মনে হচ্ছিল, ম্যাড়মেড়ে ড্রতেই শেষ হবে টেস্ট। কিন্তু বাধা হলেন বেন স্টোকস। দ্বিতীয় ইনিংসে ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিকের’ নেওয়া ঝুঁকিতেই শেষ দিনে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ল ইংলিশরা।
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান-ইংল্যান্ড টেস্টটা ছিল ঐতিহাসিক। কারণ ১৭ বছর পর বাবর আজমদের ডেরায় পা রেখেছিল ইংলিশরা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সোমবার স্বাগতিকদের ৭৪ রানে হারিয়েছে ইংল্য্যান্ড। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ জয়ে ১-০তে লিড নিল ইংল্যান্ড। চারদিন বিরতির পর দুদলের দ্বিতীয় লড়াই ৯ তারিখ। ১৭ ডিসেম্বর সিরিজের শেষ টেস্ট।
পাকিস্তানে ১৭ বছর পর টেস্ট ম্যাচ খেলতে গিয়ে শুরুতেই বিরাট ধাক্কা খায় ইংলিশরা। ভাইরাসের আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন মূল দলের অনেক ক্রিকেটার। কিন্তু সেসব শঙ্কা পেছনে ফেলে ঠিকই নির্ধারিত দিনে মাঠে নামে বেন স্টোকসের দল। আর মাঠে নেমেই চমক ইংলিশদের। প্রথম দিনে রেকর্ড ৫০৬ রান করে দলটি। সেঞ্চুরি করেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটার।
১৫১ রানেই ৬ উইকেট হারায় ইংলিশরা। ৬৫৭ রানে থামে ইংলিশদের প্রথম ইনিংস। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন জহির মাহমুদ। ইংলিশদের বড় স্কোরের জবাবে শুরুটা ভালো হয় পাকিস্তানেরও। প্রথম উইকেট জুটিতে ২২৫ রানের জুটি গড়েন দুই পাক ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক। ৪ নম্বরে নেমে অধিনায়ক বাবর আজমও খেলেন ১৩৬ রানের ইনিংস। তবে এরপর আর তেমন বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। শেষদিকে আঘা সালমআনের ৫৩ রানে ভোর করে ৫৭৯ রানে অলআউট হয় বাবরদের দল।
প্রথম ইনিংসে ইংলিশ বোলারদের মধ্যে চমক দেখিয়েছেন উইল জ্যাকস। টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিং ব্যাট করা অনিয়মিত এ বোলার একাই ৬ উইকেট নিয়ে ধসিয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন। এছাড়া জ্যাক লিচ নিয়েছেন ২ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেও দাপট দেখিয়েছেন ইংলিশ ওপেনার জ্যাক ক্রলি। ৪৭ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে ফিরেছেন মোহাম্মদ আলীর বলে ক্যাচ হয়ে। চতুর্থ উইকেটে ৯৬ রানের ভালো জুটি গড়েছেন জো রুটো ও হ্যারি ব্রুক। তবে দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি করলেও সেঞ্চুরির দেখা পাননি কেউই। ৭৩ রানে জহির মাহমুদ রুটকে ফেরানোর পর ৮৭ রান করে ব্রুক আউট হয়েছেন নাসিম শাহের বলে বোল্ড হয়ে।
উইকেট হাতে রেখেই ২৬৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছেন তিনি। শেষ ইনিংসে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪৩ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা এবার আর ভালো হয়নি পাকিস্তানের। দলীয় ২৫ রানেই প্রথম দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে আজহার আলী ও ইমাম-উল-হকের জুটিতে কিছুটা মেরামত হয় সে ক্ষতি। এরপরই অ্যান্ডারসন ও অলি রবিনসনের তোপের মুখে পড়ে তারা।
শেষদিকে সউদ শাকিল ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের লড়াকু পারফরম্যান্স আশা জাগিয়েছিল বেশ। কিন্তু অ্যান্ডারসন ও রবিনসনের তোপ সামলাতে পারেনি পাকিস্তানের মিডল অর্ডার। ৭৪ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাবর আজমের দলকে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২২ | সময়: ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ