সর্বশেষ সংবাদ :

জমে ওঠেছে অবৈধ ব্যবসা শীত এলেই বাড়ে মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম

মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বছরের অনান্য সময়ের তুলনায় শীত মৌসুমে রোপা আমন ধান কাটার পর বেড়ে যায় মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম। জমে ওঠে অবৈধ মাটি ব্যবস্যা। এসময় অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমির মালিকরা বিক্রয় করেন ফসলী জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল), ফসলী জমি কেটে খনন করেন অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর, পুকুর সংস্কারের নামে গভীর করে মাটি বিক্রয় হয়। এতে জমির শ্রেণি পরিবর্তন হয়। ফসলী জমি কমে আসার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় জনসাধারণের চলাচলের রাস্তাঘাট। ঘন কুয়াশায় রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে ঘটে বিভিন্ন ধরনের মারাত্ম দূর্ঘটনা।
এবছর শীত মৌসুমের শুরুতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে রমরমা অবৈধ মাটি ব্যবসা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের রামশালা গ্রামে অনুমোদনহীনভাবে ইচ্ছামতো চলছে পুকুর সংস্কারের কাজ। একই ইউনিয়নের জাফরপুর গ্রামের শিক্ষক কাজী আসাদুজ্জামানের ৪৩ শতাংশ জমিতে ভেকু মেশিন (স্কেভেটর) দ্বারা পুকুর খনন করছেন ওই ইউনিয়নের আলম নামের এক মাটি ব্যবসায়ী। গোপিনাথপুর ইউনয়নের হোসেন নগরে চলছে ভেকু মেশিন (স্কেভেটর) দ্বারা মাটি খনন করে বিক্রয়।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনে ও রাতে চলছে অবৈধভাবে ফসলি জমির উপরিভাগের (টপসয়েল) মাটি বিক্রয়। অনুমোদনহীনভাবে রাতে বিক্রয় হয় তুলসীগঙ্গা নদী সংস্কারের মাটিও। এসকল মাটি ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত হয় অবৈধ ট্রাক্টর। ইতোপূর্বে কয়েকটি ট্রাক্টর রাতে অবৈধভাবে নদীর মাটি বিক্রয়ের দায়ে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।
আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরে কমে আসছে ফসলী জমির পরিমাণ। গত এক বছরেই এই উপজেলায় বিভিন্ন কারণে কমেছে প্রায় ১৮ হেক্টর ফসলী জমি। ফসলী জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কেটে নিলে জমির উর্বরতা হ্রাস পায়।
আক্কেলপুর উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, নতুন পুকুর খনন কার্য পরিচালনা করতে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে প্রত্যয়ন নিতে হয়। তবে নতুন পুকুর খনন করতে কেউ কোন প্রত্যয়ন বা পরামর্শ গ্রহণ করেন না। তবে সংস্কারের বিষয়ে পরামর্শ নিতে কয়েকজন মৎস্য অফিসে এসেছিল।
উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য দপ্তরের দেওয়া ২০১৬ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুসারে এই উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ১০৪ টি পুকুর রয়েছে।
তবে সচেতন মহল ধারণা করছেন, বর্তমান সময়ে পুকুরের সংখ্যা আরো বেড়ে গেছে এবং অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমির মালিকদের সুকৌশলে নাম মাত্র মূল্য দিয়ে খনন করা হচ্ছে নতুন পুকুর ও অধিক মূল্য দিয়ে বিক্রি হচ্ছে এসকল ফসলী জমির মাটি।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম হাবিবুল হাসান বলেন, ‘অনুমতিবিহীনভাবে ফসলী জমির মাটি কেটে পুকুর খনন আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়াও ফসলী জমির উপরিভাগের মাটি কাটলে জমির ব্যপক ক্ষতি হয়। এসকল বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২২ | সময়: ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর