রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনশনে শিক্ষক 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। এসময় তিনি সারাদেশের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় অনিয়ম, চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলা ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণের প্রতিবাদ জানান।

অনশনকারী ওই শিক্ষকের নাম ড. মো. ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে তিনি এ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে অবস্থান নেন।

 

অনশনের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘সারাদেশে চিকিৎসকদের অবহেলা এবং সাধারণ মানুষের সেবা প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা দিন দিন চরম আকার ধারণ করেছে। কিছু কিছু হাসপাতালে দেখা যাচ্ছে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাতে রোগী ও তাদের স্বজনেরা লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়। এর বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে তার সহপাঠীরা হামলার শিকার হন। চিকিৎসাক্ষেত্রে এটা নগ্নতার পরিচয়। আমাদের সবার উচিৎ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। এর প্রতিবাদেই আজ আমি অনশনে বসেছি।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘এসব ঘটনার যদি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা না হয় তাহলে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যখাত ধ্বংস হয়ে যাবে।’ কর্মসূচিতে সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাহরিয়ারের সহপাঠী হারাধন নাথ আকাশ বলেন, ‘আমরা যখন শাহরিয়ারকে নিয়ে রামেকে যাই তখন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আমাদেরকে নানা ফরমালিটিসের কথা বলে চিকিৎসায় বিলম্ব করেন। মানুষের জীবন আগে নাকি ফরমালিটিস আগে? এসব কথা বলতে গেলে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। আমাদেরকে যেন আর এমন ঘটনার সম্মূখীন হতে না হয় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ফরিদ স্যারের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি।’

 

প্রসঙ্গত, গত ১৯ অক্টোবর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার। পরে তাকে উদ্ধার রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় তার সহপাঠীরা চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। এসময় হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স ও আনসার সদস্যরা রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। এতে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী হারাধন নাথ আকাশ, নাজমুল হোসেন, আব্দুল আহাদ, রাকিব হাসানসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

 

 

 

সানশাইন/টিএ

 


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২ | সময়: ৯:২৩ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine