কাঁটাখালিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে রাজশাহীর কাঁটাখালি মাসকাঁটাদিঘী মধ্যপাড়া এলাকায় ওয়ারিস সূত্রে পাওয়া ভোগ দখলকৃত সম্পদ পুলিশের উপস্থিতিতে জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার কাঁটাখালি মাসকাটাদিঘী মধ্যপাড়া এলাকায় ২০ থেকে ২৫ জন মানুষ গিয়ে ওই এলাকার দুলুফা ওরফে হানুফা বেগমের জমি বাঁশের বেড়া ভেঙ্গে দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার মাসকাঁটাদিঘী মৌজার তফশিলকৃত জমির ওয়ারিস সূত্রে মালিক মাসকঁটাদিঘী মধ্য পাড়ার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী দুলুফা ওরফে হানুফা খাতুন (৬৫)। পিতা মৃত. মহিউদ্দিন মোল্লার ওয়ারিস সূত্রে জমিটি পেয়েছেন হানুফা। দীর্ঘদিন যাবত এই জমিটিতে বাঁশ ও খুটি দিয়ে ঘিরে বাগান করে রেখেছিলেন হানুফা। কিন্তু বেশ কিছুদিন থেকেই হানুফার এক ভাই মজিবর রহমান জোরপূর্বক এই জমিটি দখলের চেষ্টা করে আসছে।
এ ঘটনায় গত ২০২২ সালের ৩০ জুন হানুফা খাতুন (৬৫) তার ভাই মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী আবেদুন্নাহারকে আসামী করে একটি মামলাও দায়ের করেন। যা রাজশাহী বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলা সূত্রে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে গত ৫ জুলাই তফশিলকৃত সম্পদ উল্লেখ করে আদালতে মামলার বাদি হানুফা ও বিবাদী মজিবরকে নোটিশ প্রদান করে কাঁটাখালি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আইয়ুব আলী।
সেই নোটিশে, দুই পক্ষকে নিজ নিজ অবস্থানে বহাল থাকার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেই সাথে হানুফা বেগমের সম্পদে জোরপূর্বক কাউকে প্রবেশ না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়। আর এ বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
হানুফার ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিষ্ট্রার দুলাল হোসেন জানান, মামলাটি বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত রাজশাহীর বিচারক সাবিহা খাতুন গত ২ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে বাদি ও বিবাদিকে নিজ নিজ সম্পদে অবস্থান করার নির্দেশ দেন আদালত। রায়ের জাবেদা কপি এখনও হাতে পাইনি আমরা।
বিষয়টি গোপনে আমার মামা প্রতিপক্ষ মজিবর রহমান জানতে পারে। মামলায় হেরে গিয়ে শনিবার সকালে আমি বাড়িতে উপস্থিত না থাকার সুযোগে মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী আবেদুন্নাহারের নেতৃত্বে কাঁটাখালি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আইয়ুব আলী, কাঁটাখালি পৌর সভার ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইয়াসিন আলী সুকটা, রাবি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান, আবুল কালাম আজাদ, এ্যাড. জহুরুল ইসলামসহ ২০-২৫ জন পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের দখলকৃত জমি ঘিরে রাখা বাঁশের ব্যাড়া ও খুটি ভেঙ্গে ফেলে অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল নেয়ার চেষ্টা করে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও পুলিশের উপস্থিতিতে এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার চাই বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মজিবর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালতের মামলার রায় হয়েছে। রায়ের কপি এখনও হাতে পাইনি। তারা কিছুদিন আগে আমার জমিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলে। বিষয়টি কাঁটাখালি পৌর আ.লীগ সভাপতি আবু সামা সমাধান করে দেন। শনিবার সকালে আবু সামা ও পুলিশ এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে বাঁশের বেড়া ও খুটি তুলে ফেলা হয়। কোন ভাংচুর ও জোর করে কারো জমি দখল করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয় কাঁটাখালি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আইয়ুব আলী বলেন, ওই জমি নিয়ে দুই পক্ষকে আমি নোটিশ প্রদান করেছিলাম আদালতের নির্দেশে। আজ দুই পক্ষকে নিয়ে সমাধানের জন্য আমাকে ডাকা হয়। এজন্য আমি গিয়েছিলাম। তার কিছুক্ষণ পরে আমি চলে আসি। পরে কি ঘটনা ঘটে আমার জানা নেই। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে জমি দখল করা হয়েছে অভিযোগটি সঠিক না।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২২ | সময়: ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর