খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ জনসভায় শেখ হাসিনা : নৌকাই গড়বে স্মার্ট বাংলাদেশ

সানশাইন ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক, গণতন্ত্রের প্রতীক। নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই স্বাধীনতা এসেছে, এই নৌকাতে ভোট দিলেই হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্বাধীনতা অর্জনের মতো স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণেও সফল হবে আওয়ামী লীগ।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমার লক্ষ্য একটাই, দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। আমার তো চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি শুধু এদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে চাই। ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আপনারা আমাকে ক্ষমতায় এনেছেন। ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি দেশের উন্নয়ন করেছি। সম্মান এনে দিয়েছি। আজকের বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী হিসেবে এগিয়ে চলেছে। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিন। নৌকাতে ভোট দিয়েছেন বলেই এসেছে স্বাধীনতা, নৌকাই গড়বে স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরাই গড়ে দিয়ে যাবো।’
সোমবার বিকাল সোয়া ৪টায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভা মঞ্চে ওঠেন তিনি। এরপর ২২ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং দুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্র আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে খুলনার শিল্প-কলকারখানা, মোংলা বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আবারও মোংলা বন্দর চালু করেছে। পদ্মা সেতু করেছে, মোংলা পর্যন্ত রেললাইন গেছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের উন্নয়ন হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমরা করি উন্নয়ন আর বিএনপি-জামায়াত সব ধ্বংস করে দেয়।’
খুলনাবাসীকে আরও উন্নয়ন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খুলনা ও এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলে অনেক উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। তারপরও আজ যেগুলো উদ্বোধন করা হলো সেগুলো খুলনাবাসীর জন্য উপহার। সামনে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আরও উন্নয়ন করবো আমরা।’
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সারহান নাসের তন্ময়।
বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করতে হরতাল-অবরোধের নামে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত এ দেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, কেউ যদি গাড়িতে আগুন কিংবা মানুষকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে করে, ওই হাত ওই আগুনে পুড়িয়ে দেবেন, উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবেন, যেন আর কেউ সাহস না পায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামীতে ইলেকশন হবে। এই ইলেকশনের সময় একটা বিষয় সবাইকে নজরে রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াত ২০০৮ সালে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। তারা জানে, তাদের নেতা নেই, মুণ্ডুহীন দল। তাদের এক নেতা পলাতক আসামি, এক নেতা কারাগারের আসামি। এজন্য তারা ইলেকশন চায় না। জ্বালাও-পোড়াও করে ইলেকশন বানচাল করতে চায়। তাদের এই সুযোগ দেওয়া হবে না।’
বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত মানে সন্ত্রাসী। এরা মানুষের জন্য রাজনীতি করে না। মানুষ খুন বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র গুণ।’
দলের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো মানুষের নিরাপত্তা দেবে। আপনারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবেন। যাতে তারা দেশের কোনও মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। যারা আগুন দিয়ে মানুষ মারে, তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি, যারা আগুন দেয় তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই কাজে সহযোগিতা করবেন।’


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ