মান্দার ফয়সাল ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আবারও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দা উপজেলা সদর প্রসাদপুর বাজারের ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবারও ভুল সিজারিয়ানের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই প্রসূতি গত ২১ দিন ধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদলপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী আমেনা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে গত ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রসাদপুর বাজারের ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এদিন রাত ৮টার দিকে তার সিজারিয়ান করিয়ে নেন ক্লিনিক মালিক জিয়াউর রহমান জিয়া। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর আমেনা বেগমকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় ক্লিনিক থেকে।
প্রসূতি আমেনা বেগমের ভাই মোজাহারুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বোন আমেনা বেগমের পেট হঠাৎ করেই ফুলে যায়। একই সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে তাকে আবারও ফয়সাল ক্লিনিকে নেওয়া হয়। ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার পরও রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এ অবস্থায় রাত ১২টার দিকে রোগীসহ আমাদের ক্লিনিক থেকে বের করে দেন ক্লিনিকের লোকজন।
মোজাহারুল ইসলাম আরও বলেন, বোনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় একটি মাইক্রোবাস করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে গত ২১ দিন ধরে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এরই মধ্যে বোনের চিকিৎসা করাতে এক লাখ টাকার ওপরে খরচ হয়ে গেছে। তাকে বাঁচানো যাবে কিনা এনিয়ে দুঃচিন্তায় আছেন পরিবারের লোকজন।
প্রসূতির ভাই অভিযোগ করে বলেন, রামেক হাসপাতালে নেওয়া পর বিভিন্ন পরীক্ষায় রোগীর পেটে ময়লা, রক্ত জমাট বাঁধানো, নাড়ি জড়ানোসহ অপারেশনের বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ে।
ভুল চিতিৎসার কারণে বোন আমেনা বেগমের এ অবস্থা হয়েছে। ঘটনায় তদন্ত করে ক্লিনিক মালিক জিয়াউর রহমান জিয়ার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।
এবিষয়ে ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, রোগীর সিজারের পর রিলিজ দেওয়া হয়েছে। এরপরে আমার আর কিছু জানা নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিজয় কুমার রায় বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযোগের কপি হাতে পায়নি। পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য গত ২৫ জুন ফয়সাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অজ্ঞানের চিকিৎসক ছাড়াই আকলিমা বেগম (৩২) নামে এক নারীর সিজারিয়ান করা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে মাইক্রোবাসে ওই প্রসূতিকে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন রাত ৮টা দিকে মারা যান তিনি।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২২ | সময়: ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ