সর্বশেষ সংবাদ :

পাটজাগে কাটছে না পানির সঙ্কট

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: বাগমারায় পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। ফলে পাট ক্ষেতেই পাট গুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেকে পাটের ছাল তুলে সেগুলো অল্প পানিতে ধুয়ে কোন রকম রোদে শুকিয়ে হাটে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রি করতে। এভাবে পাট ধুয়ে হাটে নিয়ে যাওয়ায় তার তেমন মূল্য পাচ্ছেনা কৃষক। আবার এভাবে পাট ধুয়ে তা বাজারজাত করতে শ্রমিক খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। ফলে কৃষক পাট চাষ করে লোকসানের মুখে পড়ছে।
স্থানীয় পাট চাষী সূত্রে জানা গেছে, এখন ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। খাল বিল ডোবা নালা শুকিয়ে চৌচির। ফলে কৃষকরা পাট কেটে সেগুলো জাগ দেওয়ার মত তেমন কোন জায়গা পাচ্ছে না। স্বচ্ছল কৃষকরা কোন ডোবা বা জলাশয়ে পুকুর থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি নিয়ে সেখানে পাট জাগ দিচ্ছে। যাদের এ সামর্থ নেই তারা জমিতেই পাট ফেলে রাখছে। আবার অনেক কৃষকরা স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে পাটের ছাল তুলে সেগুলো অল্প পানিতে ধুয়ে কোন রকমে রোদে শুকিয়ে হাটে নিয়ে যাচ্ছে বিক্রির উদ্দেশ্যে।
এতে কৃষকের শ্রমিক খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। ভবানীগঞ্জ পৌরসভার কৃষক তোফায়েল জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে এবার পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। কয়েকদিন আগে সামান্য বৃষ্টি হওয়ায় সেই পাট কেটে একটি ডোবায় জাগ দিয়েছেন। এখন সেই ডোবার পানি শুকিয়ে গেছে। তিনি ওই পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে ভেজা পাট থেকে ছাল তুলে সেগুলো টিউবয়েলের পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানোর ব্যবস্থা করেছেন। তবে এতে তার শ্রমিক খরচ অনেক বেশি পড়েছে।
এদিকে পানির অভাবে আমন রোপণও পিছিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা পাট কেটে সেই জমিতে আমন চারা রোপণ করে। মাড়িয়ার কৃষক লুৎফর রহমান জানান, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এখন পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে পাট জাগ দিয়েছেন। এতে মাছের চরম ক্ষতি হচ্ছে। মাছ না পাট নিয়ে তিনি উভয় সংকটে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই উপজেলায় এবার সাড়ে পাঁচশ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পানির অভাবে অনেকের পাট জমিতেই রয়ে গেছে। তবে তিনি কৃষকদের বিকল্প উপায়ে পাটের আঁশ ছড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান।


প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২২ | সময়: ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ