সর্বশেষ সংবাদ :

র‌্যাব-পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: বাগমারায় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আসামী গ্রেপ্তার করতে এসে স্থানীয় জনতার সাথে তুলকালামকাণ্ড ঘটেছে। এই ঘটনায় এলাকায় এখন গ্রেপ্তার আতংকে রয়েছে সবাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে মচমইল বাজারে র‌্যাবের দুই সদস্য সিভিল ড্রেসে আসামি ধরতে এসে র‌্যাব, পুলিশ ও বাজারের লোকজনের মধ্যে ত্রিমূখী সংঘষের ঘটনা ঘটে। এতে র‌্যাবের এক সদস্য ও দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মাঝে এখন চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাকে পূজি করে স্থানীয় কয়েকটি মহল নিরীহ লোকজন মামলায় ফাঁসানো ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ে মেতে ওঠেছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার র‌্যাব পরিচয়ে সিভিল ড্রেসে দুইজন অপরিচিত ব্যক্তি মচমইল বাজারের বুলবুল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে তার কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা এবং দেবেন্দ্রনাথ নামে এক ব্যক্তিকে পিস্তল দেখিয়ে তার কাছে থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে র‌্যাব আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই এলাকায় নজরদারী বৃদ্ধি করে।
ওই্ ঘটনার পর গত সোমবার বিকেলে দুর্গাপুর উপজেলার শুখানদী গ্রামের বল্টু নামে এক ব্যাক্তি র‌্যাব পরিচয়ে মচমইল বাজারের এক পান ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ সময় বাজারের লোকজন তাকে ঘিরে ধরলে র‌্যাব- ৫, রাজশাহীর নায়েক সাইফুল ইসলাম ও র‌্যাব সদস্য বিজিবির হাবিলদার আফজাল হোসেন বাজারের লোকজনের উপর চড়াও হন।
এ সময় বাজারের লোকজন তাদের পরিচয় জানতে চাইলে ওই দুই র‌্যাব সদস্য তাদের কোনো পরিচয় দেয়নি এবং তাদের পরিচয়পত্রও দেখাননি। এতে সন্দেহ হলে বাজারের লোকজন জড়ো হয়ে প্রগতি সংঘের একটি ক্লাব ঘরে তাদের আটকে রেখে থানায় খবর দেয়। এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত র‌্যাব সদস্যরা এসে বাজারের লোকজনদের বেধড়ক মারপিট করে এবং আটক দুই র‌্যাব সদস্যকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে র‌্যাব-৫, রাজশাহীর কোম্পানী কমান্ডার সাকিব বলেন, র‌্যাবের ওই দুই সদস্য তাদের পরিচয় না দেওয়ায় বাজারের লোকজনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝির কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ দিকে মচমইলের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলার কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন ভবানীগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল মালেক মণ্ডল।
তিনি বলেন, ওই দিনের ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। সেখানে র‌্যাব পরিচয়ে ধুমপানরত অবস্থায় মচমইল বাজারের লোকজনের সাথে অসৌজন্য আচরন করা হয়েছে। অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনা জানার পর পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও লাঞ্চিত করা হয়। বিষয়টি তিনি আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে তুলে ধরে এর সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবী জানান।
মালেক মেয়রের দাবীর বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার সাথে সাথে সেখানে অফিসার ও ফোর্স পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুয়ায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২২ | সময়: ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ