চুক্তি বাতিলের কথা বিসিবিকে লিখিত জানালেন সাকিব

স্পোর্টস ডেস্ক: বেটউইনারনিউজের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বোর্ডকে জোনালেন এই অলরাউন্ডার।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের কড়া বক্তব্যের পর সাকিব আল হাসানের জবাব চলে এলো দ্রুতই। বেটউইনারনিউজের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা বিসিবিকে লিখিতভাবে জানালেন এই অলরাউন্ডার। ফেইসবুক পোস্ট সরিয়ে নেওয়াসহ এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও নিশ্চিত করলেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিননায়ক।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান জানান সাকিবের চিঠি পাওয়ার কথা। “ঘণ্টাখানেক আগে আমাদেরকে জানিয়েছে সে। বোর্ড সভাপতি লিখিত জবাব চেয়েছিলেন, সাকিব লিখিতই দিয়েছে। চুক্তি বাতিল করেছে সে। পাশাপাশি এটাও বলেছে যে ফেইসবুক থেকে পোস্ট সরিয়ে নেবে, কোনো ধরনের সংযোগ তাদের সঙ্গে আর থাকবে না।”
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় অবশ্য সাকিবের ফেইসবুক পাতায় বেটউইনার নিউজের অংশীদ্বার হওয়ার সেই পোস্ট ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছিলেন, এই চুক্তি থেকে সরে না এলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কোনো সম্পর্ক থাকবে না সাকিবের। চুক্তি বাতিল করার পর আপাতত তাকে এশিয়া কাপ দলে রাখায় কোনো বাধা নেই বলেই ধারণা করা যায়।
তবে চুক্তি বাতিল করলেও বিসিবির নীতিমালা ভঙ্গ করার দায় সাকিবের ওপর আছেই। জালাল ইউনুস জানালেন, এটি নিয়ে তারা সামনে আলোচনা করবেন। “আজকে আমাদের সভায় এটিও উঠে এসেছে। সে তো বোর্ডের চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। স্পন্সরশিপ চুক্তির কথা আমাদের জানায়নি। তবে আপাতত চুক্তি বাতিল করা নিয়েই আমাদের ভাবনা ছিল। নিয়ম ভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সেটা নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আবার কথা বলব।”
গত ২ অগাস্ট সাকিবের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতা থেকে বেটউইনার নিউজের প্রচার করা হয়। সেখানে বেটউইনার নিউজের জার্সি পরা ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, “বেটউইনারনিউজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক অংশীদারীত্বে আমি গর্বিত।” বেটউইনার নিউজ যদিও একটি অনলাইন পোর্টাল, তবে তারা অনলাইন বেটিং সাইটেরই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।
সাকিব ওই পোস্ট দেওয়ার একদিন পরই বিসিবি সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাকিব তাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেননি এবং তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। বিসিবির নীতিমালা অনুযায়ী, বোর্ডের চুক্তিতে থাকা সব ক্রিকেটারকে যে কোনো স্পন্সরশিপ চুক্তির কথা বোর্ডে জানাতে হয়। বিসিবির যে কোনো স্পন্সরশিপ ও এক্সপ্রেশনস অব ইন্টারেস্ট আহবানের ক্ষেত্রে পরিষ্কার উল্লেখ থাকে, টোব্যাকো, অ্যালকোহল ও কোনো বেটিং সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ, এন্ডোর্সমেন্ট বা কোনো পণ্যের দূত হওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
ছুটি কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে থাকা সাকিবকে চিঠি দেওয়ার পর থেকেই তার জবাবের অপেক্ষায় ছিল বিসিবি। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে সাকিবকে বলেন যে কোনো একটা পথ বেছে নিতে। “আমাদের কাছে কোনো সন্দেহ নেই যে এটা সারোগেট ব্র্যান্ড, একই ওরা। একেক নামে একেকটা দিচ্ছে, কিন্তু মূলত একটি বেটিং কোম্পানি, যারা গ্যাম্বলিং, ক্যাসিনো, এগুলো নিয়ে জড়িত।”
“আমাদের ক্লিয়ার কাট বলা আছে, কিসের কিসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারবে না। এই কোম্পানিটির তো সম্পর্ক আছে! আপনি বলতে পারেন, বেটউইনারনিউজ একটা নিউজ ওয়েবসাইট। কিন্তু বেটউইনারের তো বেটিং আছে, গ্যাম্বলিং আছে, সবই আছে। এটার তো অংশ। আমরা তো বলেছি এরকম সম্পর্কই থাকতে পারবে না। আমরা নিজেদের ভাবনায় পরিষ্কার। আলোচনারই কিছু নেই। এখন তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে দেশের ক্রিকেটে থাকবে নাকি বেটিংয়ে থাকবে।”


প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২ | সময়: ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর