রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে র‌্যালী ও আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার : দ্যা কার্টার সেন্টার এর সহযোগিতায় এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি “বাংলাদেশে তথ্য প্রাপ্তির অধিকারে নারীর অগ্রগতি” শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় গতকাল রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৬টি স্থানে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ বছরের দিবসের প্রতিপাদ্য ঐতিহ্যগত জ্ঞান সংরক্ষণ ও প্রেষণে আদিবাসী নারীদের ভূমিকা কে সামনে রেখে তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে আদিবাসী নারীর অংশগ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভার পাশাপাশি তানোরের চান্দুরিয়া, এবং সরনজাই ইউনিয়নে, গোদাগাড়ীর গোগ্রাম এবং মাটিকাটা ইউনিয়নে একই সাথে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৫ এবং ৬ নং ওয়ার্ডে র‌্যালীর আয়োজন করা হয়।
র‌্যালি ও আলোচনায় অধিকার বঞ্চিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং বিশ্বব্যাপী আদিবাসী জনগণ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, অঞ্চল বা টেরিটরির অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার ও নাগরিক মর্যাদা সহ যথাযথ প্রাপ্য স্বীকৃতি দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আমাদের দেশের আদিবাসী নারীরা পর্যাপ্ত তথ্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতে নানা ধারণের সংকটের মুখোমুখি হতে হয়। তথ্য প্রাপ্তিতে যদি অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা না যায় তা হলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য নিশ্চিত করা দুরহ হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে এসডিজির পাঁচ নম্বর অভীষ্টটি সকল নারীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে লিঙ্গসমতা অর্জন এবং কন্যাশিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী আদিবাসী নারীরা বহুমুখী বৈষম্যের শিকার হয়। প্রথমত নারী হিসেবে, দ্বিতীয়ত আদিবাসী হিসেবে এবং তৃতীয়ত আদিবাসী নারী হিসেবে। এছাড়া বিভিন্ন বৈষম্যমূলক নীতি এবং সমাজের বিদ্যমান পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণে আদিবাসী নারীদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত রাখাও কোন কোনে ক্ষেত্রে বাধার তৈরী হয়।
শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, চাকরি প্রভৃতি ক্ষেত্রেও আদিবাসী নারীরা খুব কমই সুযোগ পেয়ে থাকে। অথচ আদিবাসী নারীরা অপরাপর নারীদের মত নিজ নিজ কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য যেমন অবদান রাখে তেমনি টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য উৎপাদন, এমনকি আদিবাসীদের চিরায়ত জ্ঞানের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা তথা শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই সকলক্ষেত্রে তথ্য অধিকারের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতেরও অনুরোধ জানানো হয়। যার মাধ্যমে জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন তৈরী হবে।
একই সাথে ২০৩০ এজেন্ডায় লিঙ্গ সমতা এবং নারী ও কন্যাশিশুদের ক্ষমতায়নে জোর দেয়া হয়েছে। তাই তথ্য অধিকার বাস্তবায়নে অন্যান্যদের মতো আদিবাসী নারীদের জন্যও সমান সুযোগের দাবি তুলে ধরা হয়। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ৯ আগস্ট দিনটি পালন করে আসলেও বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে পালিত হয়ে আসছে। আশুরা বা ১০ই মহররম দিনটি আমাদের দেশের জন্য নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। যা এবছর ৯ আগস্ট পালিত হবে পবিত্র আশুরা। তাই আশুরার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখে যথাযথ মর্যাদায় ৮ আগস্ট আন্তর্জাাতিক আদিবাসী দিবস পালন করে এসিডি।
চান্দুড়িয়া ইউনিয়নে নারী গ্রুপের সভাপতি অলংকার সরেন, নারী ইউপি সদস্য ফেরদৌসি বেগম, সরনজাই ইউনিয়নে জলনী মার্ডি, ইউপি সদস্য দোলন চাঁপা, মাটিকাটা ইউনিয়নের কোর্ট মিশন পাড়া নারী গ্রুপ সভাপতি কমিউনিটির তাবিথা সরেন, গোগ্রাম ইউনিয়নে এসিডির প্রোগ্রাম অফিসার মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, কৃষ্ণা বিশ^াস এবং শাহানা শারমিন বক্তব্য রাখেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২২ | সময়: ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ