সর্বশেষ সংবাদ :

মান্দার ফতেপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ফতেপুর কলিম উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ আহাদ আলীর বিরুদ্ধে নিয়োগ ব্যাণিজ্য, ঘুষ গ্রহণ, অর্থ আত্মসাৎসহ নানান অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে গভর্নিং বডির সদস্য এসএম নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে আঞ্চলিক শিক্ষা দফতরে এ সংক্রান্ত অভিযোগ করা হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন এলাকাবাসী।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এছাড়া এর আগে গত ১৬ জুন রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে অভিযোগ করা হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে এ অভিযোগ করেন ফতেপুর গ্রামের এসএম নজরুল ইসলাম।
তাদের অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আহাদ আলী বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে দায়িত্ব পালন করছেন। এ দায়িত্ব পালনের সময় নানান দুর্নীতি করে আসছেন। গত ১৮ জুলাই থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহাদ আলী কলেজে অনুপস্থিত রয়েছেন। চলতি দায়িত্ব কাউকে না দিয়েই তিনি অনুপস্থিত বলেও জানা গেছে। কলেজ গভর্ণিং বডির সভাপতি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। কলেজ শিক্ষক প্রতিনিধি মকছেদ হোসেন এ ঘটনার সত্যতা শিকার করেন। তিনি বলেন নিয়োগ নিয়ে জটিলতা হয়েছে। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনুপস্থিত রয়েছেন। সভাপতিও এলাকায় নেই। বিশেষ করে অধ্যক্ষ কলেজে অনুপস্থিতির কারনে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর কাম-অফিস সহকারী, ল্যাব এ্যাসিস্টেন্ট (কম্পিউটার) ও ল্যাব এ্যাসিস্টেন্ট (রসায়ন) পদে সভাপতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। কলেজ কোন ল্যাব ও কম্পিউটার ল্যাব না থাকলেও ল্যাব সংকান্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। প্রেক্ষিতে-২০২১ সালে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় কিন্তু কোন প্রকার ফলাফল ঘোষনা করা হয়নি। অথচ গত বছরের জুলাই মাসে এমপিওতে ওই তিনটি পদে আসিফ আলী, আলমগীর হোসেন ও হারুন রশিদের বেতন আসে। বাস্তবে তখনও তারা স্ব-শরীরে কলেজে যোগদান করেনি। যোগদানের আগেই তাদের বেতন আসে।
অভিযোগ জানা যায়, নিয়োগপ্রাপ্ত শেখ মো. আসিফ ২০২১ সালে জুলাই মাসে এমপিও হয়ে পরের মাসেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে ২৪ আগস্ট সোনালী ব্যাংক থেকে বেতনের অনুকূলে ব্যক্তিগত ঋণ হিসেবে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ঋণের টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহাদ আলী উৎকোচ হিসাবে টাকা গ্রহণ করেই এক লাখ পঁচাশি হাজার সাতশত পঁয়ত্রিশ টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোনালী ব্যাংক শাখায় ঋণ পরিশোধ করেন। অন্য দুই নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরাও নিজ নামে বেতনের অনুকুলে সাত লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। তা অধ্যক্ষ ও দাতা সদস্য এসএম. নূরুল ইসলাম গ্রহণ করেন। এছাড়াও নিয়োগকালীন এস.এম নূরুল ইসলামের সোনালী ব্যাংক হিসাব নম্বরে বিভিন্ন সময় প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা গ্রহন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এলাকায় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। কারো কারো টাকা পরিশোধ করছেন আবার কারো করো টাকা পরিশোধ করছেন না। এই নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ বিরাজ করছে। অন্য দিকে কলেজের অভ্যন্তরীন আয়, জমি ও পুকুরের লীজ নিয়েও দুর্নীতি করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহাদ আলী ও দাতা সদস্য এসএম নূরুল ইসলাম বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহাদ আলী ও দাতা সদস্য এসএম নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অন্যথায় তারা স্থানীয়ভাবে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবেন।
এসব ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহাদ আলী সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, নিয়মিত কলেজ করছেন। দুর্নীতির সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি একা কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন না। নিয়োগ কমিটিই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।


প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২২ | সময়: ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ