সর্বশেষ সংবাদ :

সাজসজ্জা ছাড়াই রাবির ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

আলোকসজ্জা ছাড়াই অনেকটা সাদামাটাভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবছর নানা রঙের বাতিতে পুরো ক্যাম্পাস সজ্জিত করা হলেও এবার দেশে চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কারণে আলোকসজ্জা বাদ রাখা হয়। এবার পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও ফেস্টুন উড়ানো, র‌্যালি ও আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উৎসব।

দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। পরে এক আন্দন র‌্যালি বেরা করা হয়।

 

আনন্দ র‌্যালিটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসন ভবনের সামনে শেষ হয়। পরবর্তীতে শিক্ষকদের সুবিধায় একটি নতুন এসি বাস এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছে। ফিতা কেটে বাস ও অ্যাম্বুলেন্সের উদ্ধোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। পরে সাবাশ বাংলার মাঠে বৃক্ষরোপন করা হয়। বেলা ১১টায় শহীদ শহীদ উদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গিকার করেন উপাচার্য।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী জাকারিয়া ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক। আলোচক হিসেবে ছিলেন গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুব্রত মজুমদার ও বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম।

আলোচনা সভায় উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে চলেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আজ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজ নিজ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু  বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় আমরা পিছিয়ে আছি সত্য। কারণ সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা কর্পোরেট কেন্দ্রীক। তারা শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন।

অপরদিকে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সৃষ্ট হয়েছে মানব কল্যাণের জন্য। ফলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পার্থক্য থাকবেই। তবে সৌভাগ্যের বিষয় ওইসব নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতা ও গবেষণা করছেন।

প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। কালের বিবর্তনে বর্তমানে ৭৫৩ একরের বিশাল ভূমিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। রয়েছে এক হাজার ২০০ শিক্ষক ও দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৯টি। ১২টি অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল রয়েছে ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ছয়টি হল। এছাড়াও গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরি।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২ | সময়: ১০:১২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine