শ্রমিক নেতা নুরুল হত্যার তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় এজাহারে আসামীদের নাম ও বর্ণনা পরিবর্তনের দূনীর্তি দমন কমিশনের মামলার তদন্ত কাজ আগামী ৪ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ সময় তদন্তকাজ শেষ করে আগামী ৪ মাসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার বিষয়ে জানানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার ( ১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এ নির্দেশ দেন। পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদ ওরফে শাকিলের রুল শুনাতিতে রায়ের বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমান এ নির্দেশ প্রদান করেন। আপাতত জামিনে মুক্ত হতে পারছেন না সাবেক (ওসি) শাকিল উদ্দিন। তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
এর আগে হাইকোর্ট মামলাটি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেন। গত বছরের ২২ জানুয়ারি রাজশাহী দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে এই মামলায় শাকিলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান তালুকদার একটি পৃথক প্রতিবেদন জমা দেন। এই প্রতিবেদনেও শাকিলকে দোষী সাব্যস্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ জুন পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের একটি ইটভাটা থেকে উপজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে তিনি ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংগঠনের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে ফলাফল নিয়ে রাজশাহীর আদালতে নুরুল ইসলাম একটি মামলা করেন। মামলা চলাকালীন ওই বছরের ১০ জুন রাতে নিখোঁজ হন নুরুল ইসলাম। পরদিন স্থানীয় একটি ইটভাটায় তার লাশ পাওয়া যায়।
নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে নিগার সুলতানা একদিন পর পুঠিয়া থানায় প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুর রহমানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দাখিল করেন। ওসি শাকিল এজাহারটি সংশোধন করতে বলেন বাদীকে। বাদী এজাহার সংশোধন করে দাখিল করেন। এ বিষয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় নিহতের স্ত্রী রাজশাহীর আদালতে আরেকটি মামলা করেন। তখন আদালতের নির্দেশে পুলিশ নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার একটি এজাহার দাখিল করেন। তবে পুলিশের দাখিল করা এজাহারে মামলায় কোনো আসামির নাম ছিল না। সবাই অজ্ঞাত।
বাদী নিগার সুলতানা আদালতকে বলেন, যে এজাহারটি তিনি থানায় দিয়েছিলেন পুলিশ সেটি আদালতে জমা দেননি। মনগড়া একটি এজাহার দিয়েছেন যা তিনি থানায় দাখিল করেননি। পরে বাদী উচ্চ আদালতে রিট করলে আদালত শাকিলকে সাময়িক বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন দুর্নীতি দমন কমিশনকে। সেই মামলাতেই তিনি এখন জেলহাজতে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২ | সময়: ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ