সর্বশেষ সংবাদ :

বরেন্দ্রের মাটিতে ফুটলো টিউলিপ

উপল আরাফাত: বেশির ভাগ মানুষের অভিমত টিউলিপের উৎপত্তির আদিস্থান নেদারল্যান্ডস। তবে এই মত নিয়েও আছে বিতর্ক। অন্য এক অভিমতে এই গাছ পামির মালভূমি এবং হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চল থেকে উদ্ভুত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। অটোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকেই এই ফুলের পরিচিতি রয়েছ। তবে এটি এশিয়ার দেশীয় ফুল।
মূলত মধ্য প্রাচ্য, ইরান, আফগানিস্তান এবং চীনে প্রাকৃতিকভাবে টিউলিপ ফুল ফুটতে দেখা যায়। এতো পথ পাড়ি দিয়ে সেই চোখ জুড়ানো টিউলিপ ফুল ফুটেছে বরেন্দ্রের মাটিতে।
নেদারল্যান্ডে টিউলিপ ফুল নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন রাজশাহীর ফুল প্রেমিক চাষি হাসান আল সাদী পলাশ। শুধু টিউলিপ নয়। রাজশাহী শহর থেকে দূরে দামকুড়া এলাকার পলাশবাড়িতে প্রধান রাস্তায় গড়ে উঠেছে তার ড্রিমার্স গার্ডেন। বিশাল আমবাগানের মধ্যে একেবারে অভিনব পদ্ধতিতে এ ফুল চাষ করা হয়েছে। আম বাগানের মধ্যেই ৮ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ফুলের বাগান।
শীত আবহাওয়ার দেশ ছাড়া এশিয়া মহাদেশের ভারত, আফগানিস্তান ও গুটিকয়েক দেশ ছাড়া এমন দৃষ্টি জুড়ানো টিউলিপ ফুলের দেখা মেলা ভার। এবার সেই টিউলিপ তার রূপের শোভা ছড়াচ্ছে বরেন্দ্র অঞ্চলে। ড্রিমার্স গার্ডেন নেদারল্যান্ডে থেকে আমদানি করে নিয়ে এসেছে ফুলের চারা। শুরু করেছে বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ।
রাজশাহী শহর থেকে দূরে দামকুড়া এলাকার পলাশবাড়িতে প্রধান রাস্তায় গড়ে উঠেছে ড্রিমার্স গার্ডেন। বিশাল আমবাগানে রয়েছে এই ফুলের চাষ। সেখানে টিউলিপসহ নানা রকমের ফুল পাওয়া যাবে ১২ মাস।
ড্রিমার্স গার্ডেনের পরিচালক হাসান আল সাদী পলাশ বলেন, প্রথমে বড় পরিসরে শুরু করার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু কাছের কোন মানুষই সমর্থন দেয়নি। আম বাগানের নিচে ফুলের বাগান। নেতিবাচক কথায় মন ভেঙে গিয়েছিল। মনের সঙ্গে এক ধরনের যুদ্ধ করেই এ উদ্যোগ নেয়া। এখন আশা করছি খোদা আমার পরিশ্রমের দাম দিবেন।
হাসান আল সাদী পলাশ জানান, টিউলিপের এক হাজার চারা রোপন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ফলাফল ভালো। ড্রিমার্স গার্ডেনে ফুলের চারা, ফুল বিক্রি ছাড়াও প্রদর্শনী হবে। প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে দুপুর ১২ ও দুপুর একটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এজন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ মূল্য দিতে হবে।
তিনি আরও জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে অনেক আমের বাগান আছে। যেগুলো সারা বছর এমনি পড়ে থাকে। আমার মাথায় আসে এ বাগানকে কোনভাবে কাজে লাগানো যায় কি না। সেই ভাবনা থেকেই এমন উদ্যোগ নেয়া।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি দপ্তরের হিসেবে, সর্বশেষ গত ২০১৭-২০১৮ কৃষি বর্ষে এই অঞ্চলে আমবাগান ছিল ৭০ হাজার ৩৪৬ হেক্টর। বর্তমান সময়ে এসে এ পরিমান আরো কয়েক হাজার হেক্টর বেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই।
এ বিশাল পরিমানে জমি’র কিছু অংশও যদি ফুল চাষের মতো কাজে ব্যবহার করা যেত তাহলে অনেক অর্থ আয় হতো। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হবে।
ড্রিমার্স গার্ডেনের পরিচালক হাসান আল সাদী পলাশ বলেন, টিউলিপ চাষে যদি সফলতা আসে তাহলে আগামীতে আরো বড় পরিসরে চাষ করবো। বাণিজ্যিকভাবে এই ফুলের চাষ শুধু করেছি। টিউলিপ বর্ষজীবী ও বসন্তকালীন ফুল হিসেবে পরিচিত। প্রজাতি অনুযায়ী এর উচ্চতাও ভিন্ন হয়। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত মৌসুমে তাপমাত্রা কম থাকে বিধায় সেখানে টিউলিপ ফুলচাষের সম্ভাবনা রয়েছে। এই ফুল সৌন্দর্য্য বর্ধণও করবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২ | সময়: ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ