আঠাশ বছর পর পিতৃত্বের দাবি!

স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় ২৮ বছর পর রাজশাহীর পবায় পিতার স্বীকৃতির দাবিতে ন্যায় বিচারের আবেদন করেছেন মিলন হোসেন নামে এক যুবক। এমন আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের কাছে যান এলাকাবাসী। উপজেলার সোনাডাঙ্গা গ্রামে এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে এ নিয়ে পিতার ও ছেলের পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে পিতা জান মোহাম্মদ স্বীকৃতি না দিলেও অভিযুক্তের ভাইসহ এলাকাবাসী স্বীকার করেছে মিলন হোসেনের দাবি সত্য। অপরদিকে পিতার স্বীকৃতি না থাকায় মিলন হোসেন বিয়ে করতে না পারাসহ নানান অসুবিধায় পড়েছেন। এছাড়াও জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন পরিচয়পত্রে পিতার স্বীকৃতি না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে মিলনকে। নিজের পিতা প্রমাণের জন্য ডিএনএ টেস্টের দাবিও করেছেন মিলন হোসেন নামের ওই যুবক।
জানা যায়, উপজেলার পানিশাইল গ্রামের চারচিটের মোড় এলাকার কাপড়ের ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ রাজাকারের মারপিটে মারা যায়। পাশাপাশি রাজাকাররা মজিদের বাড়ি থেকে টাকাসহ বিক্রয়ের জন্য রক্ষিত কাপড় লুট করে। এতে ওই পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। প্রায় ৩০ বছর আগে মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে জহুরা বেগমের সাথে পাশের গ্রামের মৃত মামলুৎ মন্ডলের ছেলে জান মোহাম্মদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গ্রামবাসী জানতে পেরে রেজিস্ট্রির মাধ্যমে তাদের বিয়ে দিয়ে দেন।
তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলে সস্তান হয়। এরপর স্থানীয় সালিশ মীমাংসার মাধ্যমে জান মোহাম্মদ জহুরা বেগমকে পরিহার করে। কিন্তু ছেলে মিলন হোসেন মা জহুরা বেগমের সাথেই থেকে যায়। জান মোহাম্মদ প্রভাবশালী হওয়ায় নিঃস্ব জহুরা বেগমের পরিবার স্থানীয়ভাবে বারবার আবেদন করেও ছেলেকে পিতার স্বীকৃতি এনে দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে জান মোহাম্মদের ভাই আফসার আলী বলেন, তার ভাই জান মোহাম্মদের সাথে জহুরা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ে রেজিস্ট্রও করা হয়। কিন্তু তার ভাই জহুরাকে বাড়িতে নেয়নি। মতিয়া বিলের আব্দুল হাতেম, সোনাডাঙ্গা গ্রামের সুলতান ও সাইফুল ইসলাম মিলনের দাবি ন্যায্য বলে জানান।
এদিকে পিতার স্বীকৃতি না থাকায় স্কুলে ভর্তি করতে পারেনি ছেলেকে। এমনকি মিলন হোসেন বিয়ে পর্যন্ত করতে পারছেন না। এছাড়াও জন্ম নিবন্ধন, ভোটার আইডি কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন পরিচয়পত্রে পিতার স্বীকৃতি না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে মিলনকে। নিজের পিতা প্রমাণের জন্য ডিএনএ টেস্টের দাবিও করেছেন মিলন হোসেন নামের ওই যুবক।
অপরদিকে মিলনের মামা সামাউন হক সুইট বলেন, বোনের বিয়ের সময়ে আমরা অনেক ছোট। বোনের বিয়ে রেজিস্ট্র হয় বায়ার হামিদ কাজীর কাছে। এখন রেজিস্ট্রর কাগজ চাইলে হামিদ কাজী টালবাহানা করছে। তিনি বলেন, জান মোহাম্মদ তার ভাগ্নের পিতার স্বীকৃতি না দিলে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জান মোহাম্মদ কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২ | সময়: ৮:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ