৩ দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে

গত তিন দিন ধরে দেশের উত্তর প্রান্তের জেলা পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। রাতে ও দিনের তাপমাত্রায় কিছুটা তারতম্য হলেও শীতের প্রকোপ কমছে না। রাতে ঝরছে কুয়াশা বৃষ্টি। শৈত্যপ্রবাহের কারণে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে শীতে কাঁপছেন মানুষ। ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। জেলার শীতার্ত অসহায় ছিন্নমূল মানুষ ও দিনমজুররা বিপাকে পড়েছেন। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, রবিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃহস্পতিবার ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঘন কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে জেলাবাসী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শীতের প্রকোপে জেলার শ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, ভ্যান ও রিকশাচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না। আবার অনেকে কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এদিকে শীতের সকালে ঠান্ডা পানিতে গৃহস্থালীর কাজ করতেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা অবশ হয়ে যাওয়া হাত-পায়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন। রাতে ও সকালে শহরের রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরে চলাচল করছে। কোনও কোনও দিন দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না।

ঘন কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত জেলার পাঁচ উপজেলায় ও তিনটি পৌরসভায় সরকারিভাবে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৪ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় নগণ্য। এ কারণে শীতার্ত অসহায় মানুষ শীতবস্ত্রের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভিড় করছেন। জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার গৃহিণী সানজিদা শারমিন জোহা জানান, শীতের সকালে সাংসারিক কাজ করতে গিয়ে ঠান্ডা পানিতে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। জেলার সদর উপজেলার গরিণাবাড়ি ইউনিয়নের দিনমজুর রমজান আলী বলেন, ‘পরিবারের পাঁচ সদস্যের মধ্যে গত বছর মাত্র একটি কম্বল পেয়েছি। সবাই মিলে ব্যবহার করায় সেটা আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ বছর এখনও কোনও কম্বল পাইনি।’ বরাদ্দ পেয়েছেন। যা ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গরীব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্রের চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি বছর জেলায় প্রায় ৩৪ হাজার শীতবস্ত্র বরাদ্দ পেয়েছি। এসব শীতবস্ত্র উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আরও শীতবস্ত্রের জন্য চাহিদা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২ | সময়: ১:৫৭ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর