সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করায় স্বামী-স্ত্রীর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিনমাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এসময় আসামী আফসার আলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করেন বিচারক।
মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মেহেদী হাসান তালুকদার এ আদেশ দেন। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, জেলার সাপাহার উপজেলার নূরপুর গ্রামের আবদুল হক মন্ডলের ছেলে আফসার আলী ও তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বেগুন গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে জেলার সাপাহার গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিন মন্ডলের ছেলে ওসমান গনির সাথে আফসার আলীর গন্ডগোল হয়। গন্ডগোলের সূত্র ধরে মনোয়ারা খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেন আফসার আলী। এরপর মনোয়ারা খাতুনকে দিয়ে ২০০৫ সালের ৬ এপ্রিল ওসমান গনির বিরুদ্ধে সাপাহার থানায় একটি অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় সাপাহার বাজার থেকে উকিলপাড়া যাওয়ার পথে তিলনা রোডের আফিল উদ্দিনের বাড়ির কাছে পৌঁছলে ওসমান আলী পিছন দিক থেকে মনোয়ারা খাতুনকে জাপটে ধরে রাস্তার পূর্ব পাশে ধানের চাতালে নিয়ে জোর পূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে।
পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা আছে মর্মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। উভয় পক্ষের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আদালত বেগুন গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে ওই মামলাটি মিথ্যা ভাবে দায়ের করা হয় মর্মে প্রতিয়মান হয়। পরে ওসমান গনিকে আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে ওসমান গনি ২০১৩ সালে ১১ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা দায়ের করায় আফসার আলী ও মনোয়ারাকে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।
দুই পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহন শেষে মঙ্গলবার আদালত আফসার ও মনোয়ারা খাতুন উভয়কেই পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে। এছাড়া ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিনমাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের ঘোষণা দেয় আদালত।
এর আগে আফসার আলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে আদালতে উপস্থিত আফসার আলীকে কারাগারে প্রেরণে নির্দেশ দেয় আদালত। একই সাথে তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা সহগ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।