৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির নির্দেশ পুতিনের, ইউক্রেইনের প্রত্যাখ্যান

সানশাইন ডেস্ক: রুশ অর্থোডক্স চার্চের অনুরোধে অর্থোডক্স ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে ইউক্রেইনে ৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ইউক্রেইন যুদ্ধবিরতিতে যাবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুতিন যুদ্ধবিরতির ওই নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া না দিলেও পরে টুইটারে এক বার্তায় ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, ইউক্রেইনের দখল করা ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ার সব সেনা প্রত্যাহার করে নিলেই কেবল ‘অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি সম্ভব। ভণ্ডামি নিজেদের কাছেই রাখুন’।
তিনি আরও বলেন, “ইউক্রেইন রাশিয়ার মতো বিদেশি ভূখন্ডে আক্রমণ শানাচ্ছে না, বেসামরিক নাগরিকদেরকে মারছে না। তারা কেবল নিজেদের ভূখন্ডে দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্যদের ধ্বংস করছে।” পুতিন যে যুদ্ধবিরতির নির্দেশ দিয়েছেন, সেটি ৬ জানুয়ারি শুক্রবার মধ্যদুপুর থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিক কোনো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এল।
অর্থোডক্স খ্রিস্টানরা আগামী ৬ ও ৭ জানুয়ারি ক্রিসমাস উদযাপন করবে। রাশিয়া এবং ইউক্রেইন উভয় দেশে অনেক অর্থোডক্স খ্রিস্টান বসবাস করে। রাশিয়ার বিশপ প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেইন যুদ্ধের উভয় পক্ষকে ক্রিসমাসে যুদ্ধবিরতি পালনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার পুতিন তার নির্দেশে বলেন, ‘‘মহাপবিত্র প্যাট্রিয়ার্ক কিরিলের আবেদনকে বিবেচনায় নিয়ে আমি রুশ ফেডারেশনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিচ্ছি যেন ইউক্রেইনের সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাশিয়ার সময় আগামীকাল ৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করা হয়।” ক্রেমলিন থেকে দেওয়া বিবৃতিগুলিতে সবসময় রাশিয়ার সময় ব্যবহার করা হয়।
পুতিন আরও বলেন, ‘‘অর্থোডক্স রীতিতে বিশ্বাসী বিপুল সংখ্যক নাগরিক শত্রু নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বসবাস করে, এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখে আমরা ইউক্রেইনকেও যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার এবং নাগরিকদের ক্রিসমাসের সন্ধ্যার এবং ক্রিসমাসের দিনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” ইউক্রেইনের পক্ষ থেকে পুতিনের এই আহ্বানে সাড়া দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে দিনের প্রথমভাগে বিশপ কিরিলের যুদ্ধবিরতির আহ্বানও বতিল করে দিয়েছিল ইউক্রেইন।
তখন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছিলেন, তারা রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চকে ‘যুদ্ধের প্রচারক’ হিসাবে বিবেচনা করে যারা ইউক্রেনীয়দের ‘গণহত্যা’ এবং রাশিয়ার সামরিকীকরণকে উস্কে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ক্রিসমাস যুদ্ধবিরতি নিয়ে রুশ অর্থোডক্স চার্চের বিবৃতি একটি নিষ্ঠুর ফাঁদ এবং যুদ্ধের প্রচারের একটি উপাদান মাত্র।”


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ | সময়: ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ