মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীসহ দুইজনকে হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আর দুজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মরহুম চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীর বড় ভাই সাবেক শিক্ষা অফিসার গোলাম রহমান। তিনি বলেন, বিগত সময়ে যতোবার রায় দেয়া হয়েছে ততোবারই ৫ জনের ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়েছিল। কেন সেই রায় অমান্য করে ২ জনকে যাবজ্জীবন দেয়া হলো।
উক্ত রায়ে আসামীদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো হয়েছে বলে মরহুম পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীর পরিবারের পক্ষ থেকে ঘোষিত রায় পুণঃবিবেচনা করে ৫ জনের ফাঁসি বহালের দাবী জানানো হয়েছে। চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীর বাড়ি শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের মচমইল গ্রামে। তার পিতার নাম মরহুম কাবিল উদ্দীন আহম্মদ।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১৬ জানুয়ারি সর্বহারা দলের সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীকে চা-স্টল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সন্ধ্যায় মচমইল বাজারের মারকাজ মসজিদের পেছনে রাস্তার উপরে নির্মম ভাবে জবাই করে হত্যা করেন। হত্যার পর দ্রুত গ্রামবাসী মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসে লোকজন। এ সময় পাশের শুভডাঙ্গা গ্রামের মৃত খোদাবক্স এর ছেলে আইয়ুব আলী নামে আরও একজনকে হত্যা করেন তারা। হত্যাকান্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানীর বড় ভাই গোলাম রহমান বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
পরবর্তীতে ওই মামলায় ২০০৫ সালে বিচারিক আদালত ৬ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। পরে ২০১০ সালে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তদের খালাস দিয়ে ৬ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রাখেন। ওই মামলায় জজ কোর্ট থেকে মুক্তি পান আশরাফুল ইসলাম টুকু। এছাড়াও হাইকোর্ট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন আলী, বয়েন উদ্দীন কুড়ু, গোলাম মোস্তফা এবং তৎকালীন ইউপি সদস্য মরহুম শহিদুল ইসলাম।
অন্যদিকে আসামিরা আপিল করলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ফারুক হোসেন ওরফে ফারতুল ও আব্দুল গফুর ওরফে মিলন নামে দুজনের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফারুক হোসেন ফারতুল হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে জনগণের হাতে আটক হন। অন্যদিকে সেতাব ও সামানের দন্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্তদের মধ্যে বিকাশ ভারতে পালিয়ে রয়েছে।
সরকারী ভাবে দ্রুত তাকে আইন আওতায় এনে রায় কার্যকর করার দাবী জানিয়েছেন মামলার বাদী গোলাম রহমান। সেই সাথে যাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে তাদের সেই রায় বাতিল করে পূর্বের রায় বহালেরও দাবী করা হয়। অন্যদিকে মৃত্যৃদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মতিউর রহমান রায়ের আগেই মারা গেছেন।