সর্বশেষ সংবাদ :

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ দুই ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

স্পোর্টস ডেস্ক: দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে আবাহনী। মঙ্গলবার শেখ জামালকে ৪ উইকেটে হারিয়ে লিগের ২০২৩-২৪ মৌসুমের শিরোপা ঘরে তুলেছে তারা। এদিন সাকিব-সোহানদের শেখ জামাল আগে ব্যাটিং করে ২৬৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল। জবাবে ১ বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে আবাহনী ২৩তম শিরোপা নিশ্চিত করে। আবাহনীর জয়ের নায়ক চট্টগ্রাম থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসা আফিফ হোসেন। ৮৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি।
জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারকে নিয়েই আবাহনী দল গঠন করেছিল। কিন্তু জিম্বাবুয়ের সিরিজের জন্য আবাহনীর ১০ ক্রিকেটারকে যেতে হয় চট্টগ্রামে। ফলে দলটি একাদশ গঠন নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় আবাহনীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আফিফ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিবকে এই ম্যাচের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম থেকে উড়ে আসা তানভীর সেভাবে প্রভাব রাখতে না পারলেও আফিফ এবং জুনিয়র সাকিব দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
এদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট খেলার আগে শেখ জামালের হয়ে ঢাকা লিগ খেলছিলেন সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রামে লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট খেলেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে সোমবার দুপুরে দেশে ফিরে মঙ্গলবার ফের মাঠে নামলেন। যদিও চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচে তাকে দেখা যাবে না। পরের দুটো ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা আছে তার। সিরিজের আগে মঙ্গলবার ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করলেও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি তিনি। আউট হয়েছেন ৪৯ রানে। শেষ দিকে জিয়াউর রহমানের ঝড়ো ৫৮ বলে ৮৫ রানে ভর করে শেখ জামাল ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬৭ রান সংগ্রহ করেছে।
২৬৮ রানের জবাবে খেলতে নেমে সহজ জয়ের পথেই ছিল আবাহনী। সেখান থেকে শেষ দুই ওভারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শেষ দুই ওভারে আবাহনীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০ রান। ১৯তম ওভারে ১১ রান নিয়ে আবাহনী হারায় একটি উইকেট। ফলে শেষ ওভারে ৯ রানের প্রয়োজন হয়। মোসাদ্দেক হোসেন ও রাকিবুল হাসান ঠান্ডা মাথায় খেলে ১ বল আগেই জয়টা নিশ্চিত করেছেন।
তবে শুরুতেই ওপেনার সাব্বির হোসেনকে হারিয়ে আবাহনী চাপে পড়েছিল। দ্বিতীয় উইকেটে নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় মিলে গড়েন ৫০ রানের জুটি। নাঈম ২১ রানে আউট হলে ক্রিজে নামেন আফিফ হোসেন। আগের রাতে চট্টগ্রাম থেকে এসে গতকাল সকালে মাঠে নেমেই খেললেন দারুণ ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে এনামুলকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। ৮০ বলে ৬৭ রান করে এনামুল আউট হলেও ফের মোসাদ্দেককে সঙ্গে নিয়ে আরও একটি জুটি গড়েন আফিফ। দু’জন মিলে স্কোরবোর্ডে আরও ৫০ রান যোগ করেন। আফিফ সেঞ্চুরি থেকে ১৭ রান দূরে থেকে আউট হয়েছেন। ৮৮ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় নিজের ৮৩ রানের ইনিংসটি সাজান এই ব্যাটার। অন্যদিকে মোসাদ্দেক অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। খেলেন ৫৪ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
শেখ জামালের বোলারদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম দুটি এবং সাকিব, সাইফ, তাইবুর ও রিপন প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করেছে শেখ জামাল। নেমেই দলটি ১৫ রানে হারায় টপ অর্ডার তিন উইকেট। এরপর ক্রিজে নামেন সাকিব। চতুর্থ উইকেটে সৈকত আলীকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৭২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। ৬৬ বলে ৪১ রান করে সৈকত আউট হলে জুটে ভাঙে তাদের। স্কোরবোর্ডে আরও ২৩ রান যোগ হওয়ার পর দারুণ খেলতে থাকা সাকিবও সাজঘরে ফেরেন। তার আগে ৫৬ বলে ২ চার ও ছক্কায় খেলেন ৪৯ রানের ইনিংস। এরপর নুরুল হাসান ব্যক্তিগত ৪১ রানে রান আউটের শিকার হলে ফের বিপর্যয়ে পড়ে শেখ জামাল। দ্রুত বেশ কয়েকটি উইকেট হারিয়ে দুইশো রানের নিচে অলআউট হওয়ার শঙ্কাতে পড়ে যায় দলটি।
তবে শেখ জামালের জিয়াউর রহমান যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছেন, তাতে করে শেখ জামাল বিপর্যয় কাটিয়ে দলীয় স্কোরকে নিয়ে যায় ২৬৭ রানে। শেষ ওভারের দুই বল আগে রাকিবুলের ঘূর্ণিতে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৮৫ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। ৫৮ বলে ৬ চার ও ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংস।
আবাহনীর বোলারদের মধ্যে দারুণ বোলিং করেছেন চট্টগ্রাম থেকে উড়িয়ে আনা জুনিয়র সাকিব। ৬১ রান খরচ করলেও তার শিকার তিনটি উইকেট। অন্যদিকে বাহাতি স্পিনার রাকিবুল নিয়েছেন ২৯ রানে তিনটি উইকেট। এছাড়া নাহিদুলের শিকার দুটি উইকেট।


প্রকাশিত: মে ১, ২০২৪ | সময়: ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর