শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে নাসির উদ্দীন ওরফে নান্নু নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক এ বি এম গোলাম রসুল এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি হলেন, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নাসির উদ্দীন ওরফে নান্নু সাথে স্বরসতীপুর গ্রামের আব্দুস কুদ্দুসের মেয়ে পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে ১১ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এজাহার বর্ণিত ঘটনার ১০ মাস আগে কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের ময়নুদ্দিনের মেয়ে শারমিন আক্তারকে গোপনে বিয়ে করেন নাসির উদ্দীন।
পরবর্তীতে পারুল আক্তার দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানতে পারলে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় এবং এই ঘটনার জেরে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। পারিারিক কলহের জেরে পারুল আক্তারকে মাঝেমাঝেই মারপিট করতেন নাসির উদ্দীন। ২০১৮ সালের ১২ জুন দিবাগত রাত ১০টা থেকে পর দিন ১৩ জুন সকাল ৭টার কোনো এক সময় নাসির উদ্দিন তাঁর প্রথম স্ত্রী পারুল আক্তারের ঘাড় মটকিয়ে ও পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তার স্ত্রী স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে লোকজন জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় মৃত পারুল আক্তারের মামা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসা পারুল আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি নাসির উদ্দীন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন স্বাক্ষীকে আদালতে হাজির করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলী অ্যাড. সঞ্জীব সরকার। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. এমরান হাসান চৌধুরী।