সর্বশেষ সংবাদ :

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু তুলে গোদাগাড়ীতে মজুদ, জেলা প্রশাসকে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগর এলাকার বালুমহল। সেখান থেকে উত্তোলন হচ্ছে বালু। কিন্তু সেই বালু মজুদ, বিক্রি করছে পাশের রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। যেখানে রাজশাহী জেলার আরো একটি বালুমহল আছে। এঘটনায় স্থানীয় বালুমহলের ইজারাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল রাজশাহী জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গোদাগাড়ী নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।
রাজশাহী রেভিনিউ ডেপুটি কালেকষ্টর শাহীন মিয়া স্বক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়, মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বালুমহলটি বাংলা ১৪৩১ সালের সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারপ্রাপ্ত হন। পহেলা বৈশাখ তাকে দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগর বালুমহল নামে একটি বালুমহল আছে। যার সীমানা গোদাগাড়ী থেকে আনুমানিক ১০ কিলোমিটার দুরে। একটি কুচক্রি মহল রানীনগর বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর জোতগোশাই নামক স্থানে রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুদ, বিক্রি ও পরিবহন মর্মে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেনমেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল।
এমন আবেদনের বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নিদেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল জানান, গোদাগাড়ীর বালুমহলটি এবার তারা ইজারাপ্রপ্ত হয়েছেন। কিন্তু পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার রানীনগর বালুমহল নামে একটি বালুমহল আছে। যার সীমানা গোদাগাড়ী থেকে আনুমানিক ১০ কিলোমিটার দুরে। একটি কুচক্রি মহল সেই রানীনগর বালুমহল থেকে বালু উত্তোলন করে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর জোতগোশাই নামক স্থানে রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুদ ও বিক্রি করছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
তিনি আরো জানান, অনেক টাকা দিয়ে বালুমহলটি ইজারা নেয়া হয়েছে। পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগর বালুমহলের ইজারদার তার নিজ এলাকা বাদ দিয়ে তার এলাকায় এসে তাদের বালু মজুদ করছেন। যে সম্পূর্ণ বেআইনী। এতে তারা মোট অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছিলো।
মুকুল বলেন, আমি দুটি বালুমহালে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারামূল্য, ভ্যাট এবং আয়কর বাবদ সরকারকে ১৮ কোটি টাকা প্রদান করেছি। কিন্তু বালুমহালে বালু উত্তোলন শুরুর পর থেকেই নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির আশঙ্কা করছি। বিষয়টি নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইজারাদার রাসেলের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তিনি কিছুই মানছেন না। স্থানীয় প্রশাসনকে বলার পরেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেসার্স দাদু ভাই কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী রাসেল বলেন, আমার এলাকায় নৌকা ঢুকছে না। এ কারণে গোদাগাড়ীর সারাংপুরে বালু মজুত করা হচ্ছে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে বালুমহাল আইন ভঙ্গের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি ভিত্তিহীন। নিয়ম-কানুন মেনেই বালু মজুত, পরিবহণ ও বিক্রি করা হচ্ছে। আর ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুতের অভিযোগও বানোয়াট। কারণ ওয়াসায় বালু সরবরাহের কারণে সেখানে বালু মজুত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে গোদাগাড়ীর ইউএনও আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে এবং সেটি বালুমহাল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অবৈধভাবে এখানে কাউকেই বালু উত্তোলন বা মজুদ করতে দেয়া হবে না। যে এমন কাজ করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪ | সময়: ৭:৫২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine