১৫ মণ সরকারি বই বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক

চারঘাট প্রতিনিধিঃ

১৫ মণ (৬০০ কেজি) সরকারি বই বিক্রি করে দিয়েছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার উত্তর মেরামতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মখলেসুর রহমান। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে ২৭ টাকা কেজি দরে বইগুলো তিনি বিক্রি করেন।

 

 

 

বই বিক্রির কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। কিন্তু নির্দেশ থাকলেও বই বিক্রির বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে কোনো কিছু জানাননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদটি শূন্য থাকায় রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দীন এই উপজেলার দায়িত্বে আছেন। তিনি বলেন, এসব বই সরকারি সম্পত্তি। অবণ্ঠিত বই থাকলে তা সরকারকে ফেরত দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক সরকারি বই বিক্রি করে দিয়ে থাকলে অপরাধ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন তিনি।

 

 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর মেরামতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইজন সহকারী শিক্ষক জানান, প্রায় দুই বছর আগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজমল হক মারা যাবার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব নেন মখলেসুর রহমান। দায়িত্ব নেবার পরেই বিদ্যালয়ের গাছসহ যাবতীয় সামগ্রী বিক্রি করা শুরু করেন। সর্বশেষ সোমবার সকালে শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা কিংবা ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা না করেই ১৬ মণ সরকারি পাঠ্য বই ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। সহকারী শিক্ষকরা নিষেধ করলেও কারো কথায় কর্ণপাত করেননি তিনি।

 

 

 

অবণ্ঠিত এসব বইয়ের করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দীন বলেন, সরকারি নিয়মে বই বিক্রি করা নিষিদ্ধ। কোনো স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের পর বই অবশিষ্ট থাকলে প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে বইয়ের সংখ্যা জানাতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা যথাযথ মাধ্যমে শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানাবেন। অবণ্ঠিত বই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। অধিদপ্তর বিক্রির অনুমতি দিলে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে প্রধান করে নিলাম কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি উন্মুক্ত নিলামে প্রতিযোগিতামূলক দরে বই বিক্রি করতে পারবেন। সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক কোনোভাবেই নিজে বই বিক্রি করতে পারবেন না সেটি গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে। প্রমাণ হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।

 

 

 

 

সরকারি বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর মেরামতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিক মখলেসুর রহমান বলেন, গত বছরের বই স্কুলে জমা ছিল। ইঁদুরে কেটে নষ্ট করছিল। এজন্য ঢাকার এক বই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছি। এটা অনিয়মের মধ্যে পড়েনা। এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বই বিক্রি কথা এখনই জানলাম। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ

 


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ | সময়: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine