চারঘাটে ১৮ মামলার আসামী ইউপি সদস্য প্রার্থী

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে (চামটা-দৌলতপুর) সদস্য পদে উপ-নির্বাচন ৯ মার্চ। এখানে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন দুইজন প্রার্থী। এদের মধ্যে আব্দুল আলীম টিউবয়েল প্রতীক ও মুক্তার হোসেন মুক্তা মোরগ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ওই ওয়ার্ডে নারী ও পুরুষ মিলে মোট ভোটার ২৫৮২ জন।
তবে নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রার্থী সমর্থকদের মাঝে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সমথকদের ভয়ভিতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। যে কোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সাধারণ ভোটারা।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ১৮ মামলার আসামী মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে রিটানিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আলীম। সোমবার তিনি এই এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের চামটা ও দৌলতপুর গ্রাম নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর থেকে মুক্তা সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে চরম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত ৩ মার্চ শলুয়া ডিগ্রী কলেজে আব্দুল আলীমের টিউবয়েল মার্কার পোস্টার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে মোরগ মর্কার প্রার্থী মুক্তা হোসেনের লোকেরা। এছাড়াও টিউবয়েল মার্কার প্রার্থী আব্দুল আলীমের কর্মী সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে।
ওই ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য প্রার্থী মাত্র দুই জন। এর মধ্যে মুক্তা চামটা গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। তিনি বিএনপিপন্থি রাজনীতি সাথে জড়িত বলে জানান স্থানীরা। মুক্তার বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্রসহ প্রায় ১৮টি মামলাও রয়েছে। তার পুরো পরিবার মাদক কারবারের সাথে জড়িতো। তার মায়ের বিরুদ্ধেও রয়েছে মাদক মামলা। এছাড়াও সম্প্রতি এক যুবককে পনিতে ডুবিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, পরে মামলাও হয়। আর ওই ঘটনার নেতৃত্ব দেন মুক্তার হোসেন।
টিউবয়েল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আলী বলেন, আমি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী আইন মেনে নির্বাচনের মাঠে আছি। আমার প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে নাশকতা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আছে। সে বিএনপির একজন সক্রিয় সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকে সে আমাকে ও আমার সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। সাধারণ ভোটারদের মাঝে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সে জোর করে নির্বাচনে বিজয়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের লেবাস ধরে নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলেও দাবি করছে।
তিনি আরো বলেন, আমি ও আমার পরিবার জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনিতির সাথে জড়িতো। বিগত নির্বাচনে মৃত আশরাফ আলীর কাছে মাত্র দুই ভোটে হেরে যায়। চক্রান্ত করে আমাকে হারানো হয়েছে। পরে পুনোরায় ভোট গণনা করার বিষয় মামলা দায়ের করেছিলাম, কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। এবার প্রতিদন্দী প্রার্থী মুক্তার হোসেন এই প্রথম নির্বাচন করছেন। মুক্তার হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ৪ মার্চ সোমবার নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
চারঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুল আলম জানান, অভিযোগ দিয়েছে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন প্রার্থী যদি পেশি শক্তি দেখিয়ে ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থীতা বাতিলও করা হতে পারে।
চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ আলী মাদক মামলায় জেল হাজতে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি জেল হাজতে অসুস্থ হয়ে মারা যান। এ কারণে ইউপি সদস্য পদ শূন্য হয়।


প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৪ | সময়: ৫:১২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ