ফাল্গুনী বৃষ্টিতে সিক্ত রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার : শীতের আড়মোড়া ভেঙে প্রকৃতিতে সদ্যই অভিষিক্ত হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত। শুষ্ক শরীরে তাই মিলছে দখিনা বাতাসের অনুভব। প্রবহমান দমকা ঘূর্ণিতে ঝরা পাতাগুলো হুটহাট করেই যেন দলা পাকিয়ে উঠছে। বাতাসে কখনও কখনও সড়কের একপাশের পাতাগুলো সড়সড়িয়ে চলে যায় অন্যপাশে। বসন্তের এমন দোলাময় প্রাকৃতিক প্রাচুর্যকে ছুঁয়ে গেছে ফাল্গৃনি বারিধারা। বৃহস্পতিবার রাজশাহী অঞ্চলকে সিক্ত করেছে বসন্তের বৃষ্টি।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে। আর বৃষ্টি শুরু হয় ৫টা ৫০ মিনিট থেকে। অর্থাৎ ভোরের আলো ফোটার আগেই ফাল্গুনের বর্ষণে ভিজেছে রাজশাহী অঞ্চলের মাটি। বৃষ্টি চলেছে সকাল ৭টা ৪৫ পর্যন্ত।
একপশলা বৃষ্টিতে শীতের রুক্ষ প্রকৃতি যেন ফিরে পেয়েছে নতুন ছন্দ। শিমুল ও পলাশের পাপড়িগুলো যেন হয়ে উঠেছে আরও চকচকে। আমের গাছে গাছে উকি দেওয়া মুকুল শুরুতেই ফিলে পেয়েছে প্রাণ। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ বৃষ্টি আমের মুকুলের জন্য টনিক। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি হয়েছে ৮ মিলিমিটার।
কৃষকরা সাধারণত এমন বৃষ্টি প্রত্যাশা করে থাকেন মাঘ মাসে। যদিও এবার মাঘ মাসে দেখা মেলেনি কাঙ্খিত বৃষ্টির। তবে ফাল্গুন মাসের শুরুর এই হালকা বর্ষণও ফসলের জন্য খুব উপকারী। তাই সাতসকালেই মেঘের গর্জন আর বৃষ্টির স্পর্শে হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
কৃষি অধিদফতরের তথ্য মতে, রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘ খরা ও বৃষ্টিহীন মৌসুমের পর প্রকৃতি যখন রুক্ষ হয়ে ওঠে তখন এমন হালকা বর্ষণ ফসলের জন্য উপকার বয়ে নিয়ে আসে। কৃষি বিভাগ বলছে আমের জন্য আশীর্বাদ এই বৃষ্টি। তবে আমচাষিরা বলছেন, কিছু মুকুলের ক্ষতি হতে পারে এই বৃষ্টিতে।
বাঘা উপজেলার আমচাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, রাত থেকেই আকাশে মেঘ ছিল। হঠাৎ সকালে বৃষ্টি শুরু হয়। এতে কিছু আমের মুকুলের ক্ষতি হলেও সব মিলিয়ে উপকার হয়েছে। কারণ আমরা সেচ খরচ থেকে বেঁচে গেলাম। বাগানে আর সেচ দেওয়া লাগবে না। আর মুকুল খুব একটা বড় হয়নি, সেক্ষেত্রে উপকরই বেশী।
এদিকে সকালের পর বৃষ্টি থেমে গেছে ঠিকই, কিন্তু আবহাওয়া এখনও রয়েছে মেঘাচ্ছন্ন। কখনো রোদ কখনোও মেঘের লুকোচুরিও চলছে। দাপটের সঙ্গেই বইছে দখিনা বাতাস। তাই প্রকৃতি অনেকটাই হয়ে উঠেছে মায়াবী। বাধা হয়ে না দাঁড়ানোয় এই আবহাওয়াতে স্বাভাবিক আছে নগরজীবনের সবরকম কাজকর্ম।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিট থেকে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত তাদের রেইন গেজে (বৃষ্টির পরিমাপক যন্ত্র) ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সকালে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪ | সময়: ৭:১২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর