বাঘায় যুব মহিলালীগ নেত্রীর বাড়িতে এসে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের রহস্যজনক মৃত্যু !

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :

রাজশাহীর বাঘায় ধর্ম বোন পরিচয়ে যুব মহিলালীগ নেত্রীর বাড়িতে বেড়াতে এসে নাটোর সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সিদ্দিক হোসেন এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সিদ্দিক হোসেন চারঘাট উপজেলার শিবপুর গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় , নাটোর সদর হাসপাতালে কর্মরত এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার সিদ্দিক হোসেন(৫৪)ঢাকা মেট্রো ছ-৭১-১৮৭৪ নম্বরের একটি সরকারি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়ন যুব মহিলালীগ সভানেত্রী শরীফা খাতুনের বাড়িতে আসেন। এরপর তিনি হটাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে শরীফা খাতুন তাকে নিয়ে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেশমা খাতুন তাকে মৃত্যু ঘোষনা করলে শরিফা খাতুৃন সেখান থেকে সটকে পড়েন।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাঘার মাইক্রো ডাইভার তারেক হাসান বলেন, সিদ্দিক হোসেন আমার পূর্ব পরিচিত। অসুস্থতার কথা বলে আমাকে ফোন করে চন্ডিপুর বড় ছয়ঘটি গ্রামে যুব মহিলালীগ নেত্রী শরীফার বাড়ি যেতে বলে। সেখান থেকে আমি তার ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স করে শরিফা-সহ বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসি। এ সময় দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো বলেন, সিদ্দিকুর রহমান প্রায় ২০ বছর পূর্বে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন। সেই সূত্রে আমি তাকে চিনতাম। বর্তমানে তিনি নাটোর সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
এদিকে স্থানীয় লোকজন জানান, শরিফা খাতুনের বাড়িতে মাঝে মধ্যে বহিরাগত লোকজনের যাতায়াত রয়েছে। এই ড্রাইভার এর আগেও অনেকবার তার বাড়িতে এসেছে। এই মৃত্যুর খবর পেয়ে কৌশলে শরিফা খাতুন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলেও অনেকে উল্লেখ করেন। বিকেল সাড়ে ৪ টার পর থেকে শরিফা খাতুনকে খুজে পাওয়া যাইনি এবং তিনি কোন সাংবাদিকের ফোন রিসিভ করেননি।

 

তবে শরিফা খাতুন দাবি করেছেন, ঐ ড্রাইভার আমার ধর্ম ভাই। এ সূত্রে মাঝে মধ্যে তিনি আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের তিনি সরকারী এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আমার বাড়িতে আসার পর ডায়াবেটিক নিল হয়ে যাওয়ার কারনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এর আগে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা শরিফাকে ফোন দিলে তিনি কারো ফোন রিসিভ করেনিনি। তবে লাশ চলে যাওয়ার পর গনমাধ্যম কর্মীদের তিনি নিজেই ফোন করে তার বক্তব্যে দিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা: আসাদুজ্জামান বলেন, এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের মৃত্যুর খবর পেয়ে নাটোর সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও তার ছেলে শাওন এবং স্ত্রী-সহ পরিবারের লোকজন এখানে এসে তাদের কোন অভিযোগ নেই লিখিত দিয়ে লাশ নিয়ে গেছে। তবে যকটুকু জানতে পেরেছি, ঐ ড্রাইভার নাটোর থেকে সি.সি নিয়ে একজন রুগীকে রামেক হাসপাতারে নামিয়ে কর্মস্থলে ফিরে না গিয়ে উল্টো পথে বাঘায় প্রবেশ করেন।

 

সার্বিক বিষয়ে বাঘা থানা অফিসার এনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে বাঘা হাসপাতালের টিএইসও আমাদের মৌখিক ভাবে অবগত করেছেন। কিন্তু কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতাম।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৪ | সময়: ৮:৫০ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine