মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে প্রতারকচক্রের তৈরি করা মোবাইল অ্যাপ ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট’-এ প্রায় দেড় কোটি টাকা খুইয়ে এখন মামলায় ঝুকেছেন ভুক্তভোগীরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাজশাহীতে মামলা করেছেন আরও দুই ভুক্তভোগী। মঙ্গলবার রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার আমলী আদালতে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। এ নিয়ে রাজশাহীতে মোট আটটি মামলা হলো।
এই মামলা দুটিতে ইউএস এগ্রিমেন্টের রাজশাহী বিভাগীয় প্রধান মো. ওয়াহেদুজ্জামান সোহাগ (৩৮), তাঁর স্ত্রী ও বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ফাতেমা তুজ জহুরা ওরফে মিলি (৩২) এবং জেলা এজেন্ট মিঠুন মন্ডলকে (৩৬) আসামি করা হয়েছে। ওয়াহেদুজ্জামান ও ফাতেমা দম্পত্তির বাড়ি নগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। মিঠুন মণ্ডলের বাড়ি নগরীর বোয়ালিয়াপাড়ায়।
মঙ্গলবার রাজশাহী নগরীর চকপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহানুল আলম (৩৩) ও নামোভদ্রা এলাকার মঞ্জুর রহমান (৩৯) মামলা দুটি দায়ের করেন। তাদের আইনজীবী শামীম আখতার হৃদয় জানান, মঞ্জুর রহমান মোট ৮১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন এই অ্যাপে। এর মধ্যে তার নিজের টাকা ছিল ৮ লাখ। বাকি টাকা মামলার মামলার চার সাক্ষীর কাছ থেকে নিয়েছিলেন।
অন্যদিকে বাদী শাহানুল ইসলামের বিনিয়োগ ছিল ৬১ লাখ টাকা। এরমধ্যে তার নিজের ছিল ১০ লাখ টাকা। বাকি টাকা মামলার চারজন সাক্ষীর কাছ থেকে তিনি নিয়েছিলেন। আদালত দুজনের মামলাই গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী ৯ জুন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার তিনজন ও রোববার একজন ভুক্তভোগী আদালতে আলাদা আলাদা মামলা করেন। এসব মামলাতেও এই তিনজনকে আসামি করা হয়। এসব মামলাও পিবিআইকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৩ জানুয়ারি রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও ১৭ জানুয়ারি রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় আরও দুটি মামলা হয়। গোদাগাড়ী থানার মামলায় সজীব কুমার ভৌমিক ওরফে মাহাদি হাসান (৩৩) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মাহাদিই প্রতারকচক্রের মূলহোতা। তার বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদি এলাকায়।
ভাল মুনাফা পাওয়ার প্রলোভনে ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট অ্যাপে রাজশাহীর অন্তত শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সারাদেশে এই অ্যাপে প্রায় ২ হাজার মানুষ বিনিয়োগ করে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে রাজশাহীর ভুক্তভোগীরা বলছেন।
প্রথম মামলাটি দায়েরের পর রাজশাহী মহানগর পুলিশ আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে চিঠি দেয়। এর আগেই ফাতেমা ছাড়া অন্য আসামিরা সবাই আত্মগোপনে চলে যান। পুলিশ এখনও পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আর মামলা হওয়ার পর ফাতেমা আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন। পরে তিনিই উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা করেছেন।