সর্বশেষ সংবাদ :

একটি রায় ঘিরে দেশের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার’ চেষ্টা হচ্ছে: আইনমন্ত্রী

সানশাইন ডেস্ক: শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সাজার রায়কে ঘিরে বাংলাদেশের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার’ চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী রায় দিয়েছে আদালত, সরকার ইউনূসকে কোনো ‘হয়রানি করছে না’। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে গত ১ জানুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় শ্রম আদালত। তবে আপিলের শর্তে জামিন পাওয়ায় এই নোবেলজয়ীকে কারাগারে যেতে হয়নি।
ইউনূসকে ‘অব্যাহতভাবে’ হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর একটি চিঠি লেখেন যুক্তরাষ্ট্র সেনেটের ১২ সদস্য। চিঠিতে লেখা হয়, “এক দশক ধরে বাংলাদেশে দেড় শতাধিক অপ্রমাণিত মামলা মোকাবেলা করছেন অধ্যাপক ইউনূস। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার টুর্ক এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মত মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজে অনিয়মের বিষয় তুলে ধরেছে।
“এসব স্বনামধন্য সংগঠন যুক্তি দিচ্ছে, অপরাধের বিচারকাজের গতি ও বারবার তার ব্যবহারের বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচারিক হয়রানির ইঙ্গিতবাহী। পাশাপাশি, ইউনূসের অব্যাহত ও দীর্ঘমেয়াদী হয়রানির বিষয়টি বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ যে ক্রমবর্ধমান বদ্ধ পরিবেশে আছে, তার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।”
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আইনমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের মর্যাদা, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচারের ধারাবাহিকতাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি মামলাকে কেন্দ্র করে কিছু অপপ্রচার হচ্ছে।” তিনি বলেন, “সরকার কারো অঙ্গুলিতে হেলে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে। আইন অনুযায়ী ড. ইউনুসসহ অন্যান্যদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে আদালত।”
ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন মুহাম্মদ ইউনূস। সেদিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার দিক থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট করা দরকার। সরকার বারবার বলতেছে, সকল পর্যায়ে থেকে বলতেছে, এই মামলা সরকার করেনি। কিন্তু আপনারা তো (সাংবাদিক) সাক্ষী। আপনারা তো কোনো কিছু বলছেন না। এটা কি সরকার করল, নাকি শ্রমিক করল? এ জবাবটা আমাকে দেন।”
পরে ইউনূস নিজেই উত্তর দেন, “এটা কলকারখানা অধিদপ্তর, সরকারের অধিদপ্তর করেছে। শ্রমিকেরা করে নাই। শ্রমিকেরা এর কিছুর মধ্যে নাই।” এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনিসুল হক বলেন, ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করার আগে শ্রম অধিদপ্তর দুইবার পরিদর্শন করে তাদের সতর্ক করে চিঠিও দিয়েছিল। পরে আইনের কিছু ধারা লঙ্ঘন হওয়ায় অধিদপ্তর ওই মামলা করে।
নানা ধরনের সমালোচনা হওয়ায় সরকারের বক্তব্য তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের পুরো প্রক্রিয়া এবং ১২০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটরের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, অপরাধ করলে সকলকেই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।”


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪ | সময়: ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ