নিয়ামতপুরে মাঠজুড়ে সবুজ হলুদের সমোরোহ, বাম্পার ফলনের আশা

নিয়ামতপুর প্রতিনিধি : 

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার খাল- বিলপাড়ের যে দিকে দৃষ্টি যায় দিগন্তজুড়ে শুধু সরিষার মাঠে নজরে পড়ে। গত বছর সরিষার ফলনও হয়েছে বাম্পার। গত বছরের চেয়ে উপজেলায় এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর হয়ে উঠেছে চারদিক।

 

 

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে সরিষা চাষের গড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২৯২ হেক্টর। গত বছর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। এবারও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে।

 

নামে মাত্র শ্রম, সামান্য পরিমাণ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, বিনাসেচে দ্বিগুণ লাভ পাওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তাছাড়া বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও সরিষার জন্য অনুকূল আবহাওয়া ও সরকারি প্রণোদনা বৃদ্ধিতে বাড়ছে সরিষা আবাদ।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর নিয়ামতপুর উপজেলায় বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৫, বারি সরিষা-১৭, বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-১১ ও স্থানীয় টরী-৭ জাতের সরিষা বেশি আবাদ করা হয়েছে।

 

 

উপজেলার চকসিতা গ্রামের সরিষা চাষিরা বলেন, বিলধারে বন্যার পানি নেমে গেলে আমরা সরিষা চাষ করে থাকি। অল্প সময়ের, স্বল্প খরচে সরিষা চাষ করে দ্বিগুন লাভ হয়। বাজারে তেল ও খৈল কিনতে হয় না,এজন্য আমরা সরিষা আবাদ করি।

দারাজপুর মাঠের সরিষা চাষিরা বলেন, আমন ও বোরো ধানের মাঝামাঝি সময়ে বিনা সেচে সরিষা চাষাবাদ হয়। সরিষা চাষে তেমন খরচ হয় না বলে এই আবাদে ঝুঁকছে কৃষকেরা। পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদা পূরণ হয় এবং উদ্বৃত্ত সরিষা বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামসু্দ্েদাহা বলেন, উপজেলায় আগাম জাতের সরিষায় ফুল এসেছে। বাকি শস্যগুলোতে এক সপ্তাহের মধ্যে ফুল আসবে। মৌ চাষের সংখ্যা গতবারের চেয়ে এবার বেড়েছে। উপজেলা সরিষা হতে চলতি মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার ৭২০ মে. টন ফলন পাওয়া যাবে।

 

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষে কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী, আগামীতে সরিষার আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ | সময়: ৮:১৫ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine