সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষে বেশি ফলন পাচ্ছেন কৃষক

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে সমলয় পদ্ধতিতে অল্প খরচে রোপা আমন ধানের বেশি ফলন পেয়ে দারুণ খুশি কৃষকরা। আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারে ট্রেতে চারা উৎপাদনের পাশাপাশি রাইস ট্রান্সপারেন্ট মেশিনের সাহায্যে রোপণের ফলে খরচও কম হয়।
শ্রমিক সংকট নিরসন ও সময় সাশ্রয় হওয়ায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। শুধু তাই নয়, সাধারণ ভাবে বিঘা প্রতি রোপা আমনের ফলন ১৩-১৪ মণ হলেও এ পদ্ধতিতে প্রায় ২০-২২ মণ ধান হারে উৎপাদন হয়।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এ বছর প্রথম ১৫০ বিঘা জমিতে ব্রি-৮৭ জাতের ধানের সমলয় চাষাবাদ করা হয়েছে। এতে শ্রমিক খরচ, সার, বীজ সাশ্রয় হয়েছে। এমনকি ফলনও বেশি হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটায় উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর বিলে যান্ত্রিক উপায়ে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে সমলয় চাষাবাদ ব্লক প্রদর্শনীর রোপা আমন ধান কর্তনের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা।
ইউএনও আবু রাসেলের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. ইয়াসিন আলী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু, ওসি শফিউল আযম খান ও গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, এ পদ্ধতি আগে কখনো দেখিনি। প্রথমবারের মতো কৃষি বিভাগের আগ্রহে এবং তাদের তত্ত্বাবাবধানে সমলয় পদ্ধতিতে রোপা আমন চাষাবাদ করেছি। অন্যবছর এ মৌসুমে ১৪-১৫ মণের বেশি ধান পাইনি। তবে এবার বিঘা প্রতি গড়ে ২২ মণ হারে ফলন পাচ্ছি। তাছাড়া মেশিনে চারা রোপণ ও মেশিনেই কাটার ফলে খরচও অনেক কমে গেছে। এতে কৃষকরা দারুণ খুশি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহদী হাসান বলেন, গোপালপুর এলাকায় ১৫০ বিঘা জমির জন্য ৫০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও চার হাজার চারা ট্রে সরবরাহ করা হয়। তারা ১৮ দিনেই সেই চারা রাইস ট্রান্সপারেন্ট মেশিনের সাহায্যে রোপন করে। ১২০ দিনেই সেসব ধান আবার যান্ত্রিক উপায়ে কর্তন করে। এতে কৃষকের প্রতি বিঘা ধান চাষে ১০-১৫ দিন সময় ও দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে।
উপজেলা শারমিন সুলতানা বলেন, জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। সমলয়ে চাষাবাদের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার সহ ধানের উৎপাদন খরচ কমানো ও সময় সাশ্রয় হবে। এ পদ্ধতিতে আমন চাষ করলে সাধারণ নিয়মের চেয়ে বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ ধান বেশি উৎপাদন সম্ভব।


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ