সর্বশেষ সংবাদ :

লালপুরে ধান ক্ষেতের পোকা দমনে জনপ্রিয় হচ্ছে আলোক ফাঁদ

লালপুর  প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুরে ধান ক্ষেতের পোকা নির্ণয় ও দমনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ধান ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নির্ণয়ের পর জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করতে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে। এতে ধান উৎপাদনে কৃষকদের খরচ এবং অপ্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার কমাবে। সেই সঙ্গে ফসলও হবে বিষমুক্ত বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

 

 

 

সরেজমিনে সন্ধ্যায় উপজেলার চকনাজিরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়। ধান ক্ষেতের পাশে তিনটি বাশের খুঁটির মাথায় চার্জার লাইট জ্বলছে। নিচে একটি পাত্রে পানির সঙ্গে ডিটারজেন্ট পাওডার মিশিয়ে রাখা হয়েছে। পত্রে রাখা ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানির মধ্যে ধান ক্ষেতের বিভিন্ন পোকামাকড় উরে এসে পড়ছে। ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তা দমন করতে কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

 

 

 

 

আলোক ফাঁদ দেখতে আসা ধান চাষী কালাম মোল্লার সঙ্গে কথা হয়। তিনি এবছর ৩ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন। তার জমিতে পোকার আক্রমণও দেখা দিয়েছে। কিভাবে জমির ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করতে হয় তিনি জানতেন না। আজ আলোক ফাঁদ ব্যবহার মাধ্যমে জমির ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করা শিখলেন। এর মাধ্যমে এখন থেকে তিনি সহজেই ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করতে পারবেন বলে জানান।

 

 

 

লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলায় ৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। প্রায় ধান ক্ষেতেই শীষ আসতে শুরু করেছে। এ সময়ে ধানে বাদামি ঘাস ফড়িং, সবুজ ঘাস ফড়িং, পাতামোড়ানো পোকা, গান্ধী পোকা, মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করতে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর মাস ব্যাপি ৩১টি ব্লকে ১৫৩টি আলোক ফাঁদস্থাপন করেছে। এবছর উপজেলার ৩১টি ব্লকে ৩১০টি আলোক ফাঁদস্থাপনের লক্ষমাত্রা রয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় কৃষকেরা এই আলোক ফাঁদস্থাপন করছেন। ধান পাকা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। গত বছর উপজেলায় ৩১টি ব্লকে ২৮০টি আলোক র করা হয়েছিল। এ মৌসুমে আলোক ফাঁদের সংখ্যা ৩৫০টি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

 

 

 

 

লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, ধান ক্ষেতে উপকারী ও অপকারী দুই ধরনের পোকা থাকে। কৃষকরা ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকার নির্ণয় না করেই কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ক্ষতিকর পোকার সঙ্গে সঙ্গে উপকারী পোকাও মারা যেতো। ফলে ফসলের উৎপাদন কম হতো।

 

 

 

 

 

এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে জমিতে কোন ধরনের পোকা রয়েছে, কৃষকরা তা সহজেই নির্ণয় করতে পারবে। কীটনাশক ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট অঞ্চলে একযোগে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করলে উপকারী পোকা বাঁচিয়ে রেখে ক্ষতিকর পোকা ধ্বংস করায় ফসল উৎপাদনও বাড়বে বলে দাবি করেছে কৃষি বিভাগ। এতে উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং ফসল হবে বিষমুক্ত বলে তিনি জানান।

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৩ | সময়: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine