পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে নথি পাচার-ভিডিও ফাঁস

পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলো যেনো ঘুষ-দুর্নীতির আখঁড়ায় পরিনত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয় না এসব অফিসে। টাকায় কথা বলে। টাকায় ফাইল খুলে। ঘুষ না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয় এ উপজেলার ভুমি সেবাগ্রহিতাদের। এ উপজেলায় ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের ঘুষ লেনদেন আবার কখনো সরকারি নথিপত্র পাচারের ঘটনায় ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে তবুও তারা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন। তবে সচেতন মহল মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যোগসাজশ সেই সাথে জবাবদিহিতার অভাবে ভুমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পার পেয়ে যাচ্ছে বারবার।

 

 

 

 

 

 

সম্প্রতি উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিসের আওতাধীন সরকারি খাস পুকুর ব্যাক্তি মালিকানায় খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠে সহকারী কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে। নানা অনিয়ম ও কর্মকান্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন৷ এছাড়াও পাইকপাড়া ভুমি অফিসের এক ভুমি কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেন ভিডিও ফাঁস হয়েছে এখনো তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি কতৃপক্ষ। তবে এবার তহশিলদার খাদেমুল তার অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড ধামাচাপা দিতে দালাল খামারুকে দিয়ে শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে সরকারি নথিপত্র পাচারের ঘটনা ঘটিয়েছে। এমন একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়িতে দালাল খামারু ভুমি অফিস থেকে সরকারি শতশত নথিপত্র পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। খামারুর সাথে ভুমি অফিসের আরেকজন দালাল মুখে হাত দিয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে।

 

 

 

 

 

 

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি প্রস্তাবিত খতিয়ান ও নথিপত্র যা সংরক্ষনের বিধান থাকলেও অবৈধ ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে নথিপত্র সরিয়ে নেন তহসিলদার খাদেমুল ও দালাল খামারু।
জানাগেছে, দালাল খামারু নায়েব খাদেমুলের সাথে আঁতাত করে ওই ভুমি অফিসের রেকর্ড রুমে থাকতেন বছর ধরে। এমন অভিযোগ পেয়ে সাবেক এসিল্যান্ড আরাফাত আমান আজিজ দালাল খামারুসহ চিহ্নিত কিছু দালালের বিতারিত করেন।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, অফিসের তহশিলদার, অফিস সহকারী, পিয়ন-দালাল সবাই ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে কমবেশি জড়িত। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে ভুমি অফিসকেন্দ্রিক শক্তিশালী দালালচক্রও গড়ে উঠেছে। জানতে চাইলে নথিপত্র পাচারের ঘটনা স্বিকার করেছেন খামারু। তিনি বলেন,শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিসের নায়েব খাদেমুল বিষয়টি জানে তাকে বলেই নথিপত্রগুলো নিয়ে এসেছি। যারা খারিজ করতে দিয়েছে তারা চাইলে তাদের দিয়ে দিব৷ পাচার নথি গুলো কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন সব আছে নায়েব ও আমার কাছে।

 

 

 

 

 

 

 

ভুমি অফিস থেকে নথিপত্র পাচারের ঘটনায় শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা খাদেমুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, খামারু আমি যোগদানের আগে থেকে এই ভুমি অফিসের উমেদার। সরকারি অফিস থেকে বহিরাগত কেউ নথিপত্র নিয়ে যেতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, খারিজ-খাজনা দেওয়ার লোকজন ঝামেলা করছিল তাই খামারুকে নিয়ে যেতে বলেছি। তার কাছে লোকজনের শতশত দলিল থাকে। সেগুলো নিয়ে গেছে। বহিরাগত দালালের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বলেন আমার অফিস কাকে দিয়ে চলবে সেটা আমার ব্যাপার! আপনারা যত পারেন লিখেন।

এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, তদন্ত চলছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ কে এম নুর হোসেন নির্ঝর বলেন, নথিপত্র পাচারের ঘটনায় প্রাথিমক ভাবে শোকজ করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৩ | সময়: ৮:১৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine