রাবিতে ছাত্র গণজমায়েত মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: এলএনজি ভিত্তিক সকল টার্মিনাল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। নবায়ন যোগ্য জ্বালানী ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে। জ্বালানী অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে আজ বুধবার রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্র গণ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিশ^বিদ্যালয় লাইব্রেরি চত্বরে অয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সং¯’ার সভাপতি তৌসিফ কাইউম। বক্তব্য দেন, পরিবর্তন পরিচালক রাশেদ রিপন, সাইফুর রহমান, আব্দুস সবুর লোটাস, আসিফ আজাদ সিয়াম, শোহানুর রহমান রাফি ও উম্মে জাহান শ্রাবনি।
বক্তারা বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বা এমসিপিপি অনুসারে আমাদের লক্ষ্য আমাদের নিজস্ব ¯’ায়ীত্ব, জ্বালানি স্বাধীনতা এবং জ্বালানি সুরক্ষিত করা এবং বিশ্বে সবুজ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ হয়ে ওঠা এবং, আন্তর্জাতিক এবং অন্যান্য বিনিয়োগ ও সহযোগিতার মাধ্যমে আধুনিকায়ণ করা। এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত নবায়নযোগ্য শক্তিতে পৌঁছানো। আমাদের প্রথম বড় আকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি ¯’াপনের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি যা আমাদের উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করবে এবং ম্যানগ্রোভ গ্রিন বেল্টকে পুনরুজ্জীবিত করবে। মুজিব এনার্জি হাব, আমাদের কয়লা প্ল্যান্টগুলিকে হাইড্রোজেন প্লান্টের সুবিধাগুলির মতো সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর করবে। এমসিপিপি এর সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন সোলার জেনারেশনের মাধ্যমে ২.৭ বিলিয়ন ডলার বাঁচাতে পারে । এমসিপিপি সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যব¯’াপনার শক্তিশালীকরণে অবদান রাখবে। সূর্যের আলো ও তাপ, বায়ুপ্রবাহ, জলপ্রবাহ, জৈবশক্তি, শহুরে বর্জ্য ইত্যাদি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের পরিবেশও সুরক্ষিত হবে, অর্থের ও সাশ্রয় হবে।
উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নিয়ামক হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাত। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণের পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য দেশের জ্বালানি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে দ্রুত ও ব্যাপক শিল্পায়নের প্রধান সমস্যা হলো প্রাথমিক জ্বালানির স্বল্পতা। বিশেষ করে বিকল্প জ্বালানির বিষয়টি নিশ্চিত না করার কারণে বাংলাদেশকে সল্প,মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজতে আমদানি করা জ্বালানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এক জরীপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৯০ শতাংশ হবে আমদানি করা। আর এজন্য বাংলাদেশকে মোটা অংকের অর্থ জোগান দিতে হবে।
বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য ¯ি’র করা হয়েছে, তাতে গ্যাসে ৩৫ শতাংশ, কয়লায় ৩৫ শতাংশ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। বাকি ত্রিশ শতাংশ তেল, জলবিদ্যুৎ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ পাওয়ার সেল এর তথ্য অনুয়ায়ী (২০ আগষ্ট ২০২৩) তথ্য মতে দেশের ১৫২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৪৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে চলছে। বাকি ১০৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৫৩টি রক্ষণাবেক্ষণ বা জ্বালানির অভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত ১৫ জুন ২০২৩ তারিখে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ক্যাপটিভ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট।
এ পর্যন্ত গত ১৯ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে সর্বো”চ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। সরকার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে যা”েছ। বিদ্যুৎ উৎপাদন মহাপরিকল্পনার আওতায় বিদ্যুৎ এর উৎপাদন ক্ষমতা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) গত ১৮ জুলাই ২০২৩ তারিখের তথ্য অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ২২ টাকা অন্যদিকে বর্তমানে গড়ে প্রতি ইউনিট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হ”েছ মাত্র ১৫ পয়সা। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে (এলএনজি) বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হয় ১০ টাকা।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ | সময়: ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ