এশিয়ায় চরম দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে

সানশাইন ডেস্ক :

২০২০ সালের করোনা মহামারি এবং তার প্রাথমিক ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর শুরু হওয়া মূল্যস্ফীতি এশিয়ায় চরম দারিদ্রের শিকার লোকজনের সংখ্যা বাড়িয়েছে ৬ কোটি ৮০ লাখ। বর্তমানে এশিয়ার স্বল্পোন্নত-উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন অন্তত ১৫ কোটি ৫২ লাখ মনুষ। বৃহস্পতিবার বিশ্বের বৃহত্তম আঞ্চলিক ঋণদাতা সংস্থা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনটি।

এডিবির তথ্য অনসারে, বর্তমানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চরম দারিদ্র্যের শিকার লোকজনের সংখ্যা করোনা মহামারির পূর্ববর্তী বছর ২০১৯ সালের চেয়ে এই সংখ্যা ৬ কোটি ৭৮ লাখ বেশি। ২০১৭ সালে চরম দারিদ্র‌্য সম্পর্কিত একটি সংজ্ঞা দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। সেই সংজ্ঞা অনুযায়ী, কারো দৈনিক জীবনযাত্রার ব্যয় যদি ২ দশমিক ১৫ ডলারের (২৩৪ টাকা) কম হয়, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি চরম দারিদ্র্যের শিকার। প্রতিবেদনটির প্রকাশ উপলক্ষে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল এডিবি। সংস্থাটির শীর্ষ অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক সেই সংবাবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

 

এই অর্থনীতিবিদের মতে, মহামারির ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু করেছে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। এই পরিস্থিতিতে জনজীবনে দারিদ্র উচ্চহারে বাড়তে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে তা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা সংক্রান্ত বিভিন্ন তৎপরতার পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে উঠবে। ‘এশিয়ার দেশগুলোর এখন উচিত দরিদ্র লোকজনের জন্য সামাজিক-অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলোতে বিনিয়োগ এবং মনযোগ— উভয়ই বৃদ্ধি করা। দারিদ্র্যকে যদি ঠেকানো না যায়, সেক্ষেত্রে কোনো প্রবৃদ্ধিই টেকসই হবে না,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন পার্ক।

এডিবির হিসেব অনুযায়ী অবশ্য করোনা মহামারির প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে দরিদ্রের সংখ্যা খানিকটা হ্রাস পেয়েছে। সংস্থাটির ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালে মহামারি শুরু হওয়ার পর এশিয়ায় চরম দরিদ্র লোকজনের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় বেড়েছিল ৮ কোটি। কিন্তু ২০২২ সালে চরম দরিদ্রদের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি সংখ্যক কমলেও উন্নয়নশীল এশিয়ার জন্য তা তেমন স্বস্তিকর হয়নি। কারণ বিশ্বের বৃহত্তম এই মহাদেশের দেশে দেশে গত বছর থেকে লাগামহীনভাবে বাড়ছে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। ‘প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র লোকজনের দৈনিক উপার্জনের একটি বড় অংশই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে খাদ্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে। এ কারণে চিকিৎসা, শিক্ষা প্রভৃতি মৌলিক খাতগুলোতে ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে থাকছে না। পুরুষদের তুলনায় নারীদের ভোগান্তি এক্ষেত্রে আরও বেশি। কারণ এশিয়ার অনেক দেশে পুরুষ কর্মীদের তুলনায় নারী কর্মীদের কম বেতন দেওয়া হয়,’ বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে জানিয়েছে এডিবি।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট


প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩ | সময়: ৬:২৬ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine