ভোটের চতুর্মুখী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে: ইসি

সানশাইন ডেস্ক: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসবে ধীরে ধীরে। একটা সময় আসবে বিএনপিও ভোটে আসবে।’ রবিবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের আসলে একটা চতুর্মুখী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ভোট করতে গেলে আমাদের যে ধরনের কাজ করতে হয়, সব শুরু করে দিয়েছি। অনেক এগিয়ে গেছে ও চলছে। তোড়জোড় চলছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নির্দেশিকা তৈরি করা। আগামীকাল (সোমবার) কমিশন সভায় উঠবে।’
তিনি জানান, প্রশিক্ষণ শুরুর আগে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ জন্যে ভোটকেন্দ্রের তালিকা করার খসড়া এসে গেছে। এখন ভোটকেন্দ্র ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বিষয়ে তোড়জাড় শুরু হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং অফিসার দিয়ে কয়েক লাখ লোকবলকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।
এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব বিবেচনায় নীতিমালা মেনে কাজ করতে হবে। আগের মতো সবাই পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন।’ আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস থেকে থেকে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘এরপরে তফসিল ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দ শেষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে।’
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা জানান, কমিশন সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা হলে বিস্তারিত জানানো যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়োগ দেবো না। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র হয়ে পর্যবেক্ষকরা আসবেন। নীতিমালা মেনে তাদের কাজ করতে হবে।’ দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে কোনও ধরনের চাপ ছিল না বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘আমরা এতগুলো ভোট করেছি, আমরা কোনও চাপ অনুভব করিনি। এখনও আমাদের মাথায় কোনও চাপ নেই। কিন্তু বাইরে থেকে মানুষ ধারণা করতে পারে, এরকম-ওরকম চাপ রয়েছে। সত্যিকার অর্থে কোনও তরফ থেকে বলা হয়নি—এরকম করে দেন, ওরকম করে দেন। কোনও দিক থেকেই কমিশনের কেউই চাপের মধ্যে নেই। এটা জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে।’
রাজনৈতিক অস্থিরতাও প্রশমিত হবে বলে এমন প্রত্যাশায় করে এই কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কমিশনের করণীয় কিছু নেই। সব সময় বলি, বিশ্বাস করি—এসব প্রশমিত হয়ে আসবে। আল্টিমেটলি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।…সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ভোট করায় আমাদের চেষ্টা থাকবে নিরন্তর।’
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভোটের দিন ভোরে ব্যালট পেপার পাঠানোর চিন্তাভাবনা নিয়েও কথা বলেন এ নির্বাচন কমিশনার। রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ভোট মানেই চ্যালেঞ্জ। ইভিএমে হোক, ব্যালটেই হোক। চ্যালেঞ্জ উত্তরণে যা যা করা দরকার তা চেষ্টা করে যাচ্ছি। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটা বড় স্টেপ- দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়া সবখানে ব্যালট পেপার যতটা সম্ভব সকালে পাঠানোর চেষ্টা করবো। এসব নিয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা চলছে। কমিশনকে আস্থায় এসে বিএনপির আশায় রয়েছে ইসি।’
রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসবে বলে আশা রাখেন এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘অস্থিরতা তো সারা জীবন থাকবে। কোনদিন রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল না?… অতীতকে আমরা আঁকড়ে ধরবো না। অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে এগোতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এ রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা এখনও আশাবাদী বিএনপি ভোটে আসবে। দেড় বছর ধরে বরাবরই বলে আসছি, তারা আসবে। রাজনীতির কূটকৌশল, কে কীভাবে এগোবে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত বলা কঠিন। এটা তারা কীভাবে নিচ্ছেন, কী কারণে করছেন, কী চিন্তা করছেন; এটা তাদের ব্যাপার। আমরা কিন্তু আশাবাদী, কমিশন মনে করে ইনশাআল্লাহ আসবে।’
ইসিকে আস্থায় আনার বিষয়টি বিএনপির মাথায় আনার অনুরোধ জানান তিনি। রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আস্থায় রাখতে না পারলে… উনারা মাথায় নিচ্ছে না আস্থায় আনা যায়। মাথায় নিলেই আস্থায় এসে যাবে। আমার ধারণা, একটা পর্যায়ে উনারা আস্থায় নেবেন, ভোটে আসবেন আমার বিশ্বাস।’


প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৩ | সময়: ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ