সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় আইনশৃংখলা সভায় বিজিবি কমান্ডার : নদীতে পানি বাড়লে বেপরোয়া হয়ে ওঠে মাদক কারবারিরা

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত এলাকার আলাইপুর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মাসুদ হোসেন বলেন, নদীতে পানি বাড়লে মাদক পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে যায়। বর্তমানে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকের প্রবনতা বেড়েছে। তবে পূর্বের ন্যায় নির্দিষ্ট স্থান (ঘাটে) নৌকা না থেমে বিভিন্ন জায়গায় থামার কারণে মাদক কারবারিদের আটক করা যাচ্ছে না। বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন শৃংখলা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন, চোরাচালান প্রতিরোধ ও নাশকতা প্রতিরোধ বিষয় নিয়ে পৃথক চারটি মাসিক সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সীমান্তরক্ষী ঐ কোম্পানি কমান্ডার বলেন, আমরা গত একমাসে তিনটি মাদকের চালান আটক করেছি। এ বিষয়ে থানায় পরিত্যাক্ত মাদক উদ্ধার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানতে চান, শুধু পরিত্যাক্ত উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দিচ্ছেন, আসামী নেই কেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে কোম্পানী কমান্ডার মাসুদ হোসেন বলেন, নদীতে পানি বাড়লে মাদক পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে যায়। আমরা যে কোন সোর্স মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদের ধাওয়া করলে ওরা মাদক ফেলে পালিয়ে যায়। এ কারণে তাদের আটক করা সম্ভব হয়না।
তিনি, সীমান্ত এলাকার স্থানীয় লোকজন সহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কোন সহায়তা পান না বলেও অভিযোগ করেন। তবে মাদক উদ্ধার নিয়ে কোম্পানী কমান্ডারের এমন কথা শুনে মিটিং-এ উপস্থিত অনেকেই নাখোশ হন।
অপরদিকে মিটিংএ উপস্থিত বাঘা থানা পুলিশের ইন্সেপেক্টর (তদন্ত) সবুজ বলেন, বাঘা সীমান্তবর্তী উপজেলা। এখানে মাদকের প্রবনতা অনেক বেশি। আমরা গত মাসে থানায় ২০ টি মাদক মামলা রেকড সহ বেশ কিছু আসামীকে আটক করি। তবে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ৮টি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার ভাস্য মতে, থানায় প্রতিমাসে যে পরিমান মামলা রেকড হয়, তার তিন ভাগের দুই ভাগই মাদক।
সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাজশাহী জেলা আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জুয়েল আহাম্মেদ, বাঘা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মোকাদ্দেস, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা খাতুন লতা, মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহ্হামদ তুফান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহামুদুল হাসান, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মিলন কুমার দাস ও বাঘা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল লতিব মিঞা ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান। সভায় ছিলেন, চারজন ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক মন্ডলী, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
চারটি সভায় বক্তারা, মাদক, সুদের ব্যবসা, হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, গণহারে যে কোন বিষয় নিয়ে মাইকিং, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, দ্রব্য মুল্যের বাজার মনিটরিং, যানজট নিরসন, শিক্ষার্থীদের ভিডিও গেমে আসক্ত, ইমো-বিকাশ হ্যাকিং, প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্যের কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাওয়া, হাট বাজার ও খেয়া ঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায় , বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে অনিয়ম, ফিটসেন বিহীন মোটরযান চলাচল, ভাংগাড়ি ব্যাসার আড়ালে মাদকের কারবার এবং যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যত্রতত্র ভাবে গ্যাসের সিলিন্ডর বিক্রীর বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন।
এদিকে পৃথক চারটি সভার সভাপতি ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, আজকের সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। পর্যায় ক্রমে সবগুলোয় দেখভাল করা হবে। তিনি নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাঘা থানা পুলিশ সহ উপস্থিত সকলের সহোযোগিতা কামনা করেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ