ডেঙ্গু কেড়ে নিলো আরেক তরুণ চিকিৎসক ও শিক্ষিকার প্রাণ

সানশাইন ডেস্ক: ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শরিফা বিনতে আজিজ (আঁখি) (২৭) নামে আরেক তরুণ চিকিৎসক মারা গেছেন। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, ঢাকার দোহার থেকে আসা শরিফা বিনতে আজিজ নামে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, শরিফা বিনতে আজিজ দোহার উপজেলার লটাখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজের একমাত্র মেয়ে। এক ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিল বড়। ডা. শরিফা বিনতে আজিজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরই মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন বলে জানা গেছে। এর আগে সোমবার (৭ আগস্ট) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আলমিনা দেওয়ান মিশু নামে এক তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট থাকাকালে মারা যান তিনি।
এদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মোরশেদা বেগম মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে রাজধানীর মগবাজারের ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ভিকারুননিসা ন্যূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী শুক্রবার দুপুরে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যক্ষ জানান, মোরশেদা বেগম ভিকারুননিসা বসুন্ধরা শাখার প্রভাতীর শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রথম কেমোথেরাপি নেওয়ার পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার ডেঙ্গু টেস্টে পজিটিভ রিপোর্ট আসলে ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার প্লাটিলেট মাত্র এক হাজারে নেমে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
তিনি আরও জানান, তার রক্তের গ্রুপ ছিল ‘এ’ নেগেটিভ। আট ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন ছিল। তবে নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত হওয়ায় তা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় স্বজন ও সহকর্মীদের। রক্তের জোগাড় হলেও চিকিৎসক, স্বজন ও সহকর্মীদের শত চেষ্টা তাকে বাঁচাতে পারেনি। শুক্রবার সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভিকারুননিসার শিক্ষকরা জানান, দুই মাস আগে হঠাৎ ক্যানসারে আক্রান্ত হন মোরশেদা বেগম। এরপর তিনি কেমোথেরাপি নিচ্ছিলেন। প্রথম কেমো নেওয়ার পর তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। প্লাটিলেট অনেক কমে যেতে থাকে। সেটা ১০০০-এ নেমেছিল। পরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। আজ সকালে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন। মোরশেদা বেগমের মৃত্যুতে ভিকারুননিসা পরিবারের পক্ষ থেকে গভীর শোক জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী। শোক বার্তায় তিনি বলেন, রশেদা বেগমের অকাল মৃত্যুতে ভিকারুননিসা পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা এবং সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।


প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ