হত্যাকারিদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নুরুজ্জামান,বাঘা : রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা থেকে তিন তিনবার নির্বাচিত সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আজ সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম আইভি রহমানের ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী । যারা মানুষকে রক্ষা করবে তারাই আজকের দিনে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে 24 টি তাজা প্রান কেড়ে নিয়ে ছিলো। ওদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই, ওদের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে গণআন্দোলন ।

বুধবার বিকেলে বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়ন যুবমহিলা লীগের উদ্যোগে উপজেলার চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বেগম আইভি রহমান সহ ২১ আগষ্ট গেনেড হামলায় নিহত সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও আত্নার মাগফিরাত এবং দোয়া অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিকেল ৪ টায় বাজুবাঘা ইউনিয়নের কৃতিসন্তান ও রাজশাহী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা বিপাশা খাতুনের সঞ্চালনা ও বাজুবাঘা ইউনিয়ন যুব মহিলালীগের সভানেত্রী শরিফা বেগম এর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষকে রক্ষা করবে সেদিন তারই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছিল। এ দিনটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাঘা উপজেলায় যুবমহিলা লীগের পক্ষ থেকে যথাযথ মর্যদায় এ দিবসটি উৎযাপন করায় আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করা হবে এই খবরটি জিয়াউর রহমান জানতেন। হত্যাকারিদের পরিকল্পনা ছিলো মার্চ মাসে তারা এই হত্যাকান্ড চালাবেন। কিন্তু বাস্তবায়ন করেছেন আগষ্ট মাসে এসে। অথচ জিয়াউর রহমান চাইলে এটি প্রতিরোধ করতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি। বরং তিনি খুনিদের পুরুস্কৃত করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, আইভি রহমান মঞ্চে বসতেন না। তিনি জনতার কাতারে বসে কথা শুনতেন এবং সেখান থেকে মঞ্চে উঠে এসে বক্তিতা করতেন। ২০০৪ সালের এদিনে (২৪ আগস্ট) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনার তিনদিন পূর্বে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হন তিনি।

উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, বাজুবাঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাবেক উপজেলা আলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু ।

এ ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাঘা উপজেলা আ’লীগের সিনিয়ার সদস্য মাসুদ রানা তিলু ,সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির, বাঘা পৌর আ’লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকার, পুঠিয়া উপজেলা যুব মহিলালীগ নেত্রী ও পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমি খাতুন, গড়গড়ি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহমান, চারঘাট উপজেলা যুব মহিলালীগের সভানেত্রী ময়না খাতুন প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন, মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, গড়গড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি, আড়ানী পৌর আ’লীগের সভাপতি মতিউর রহমান,সাধারণ সম্পাদক রিবন আহাম্মেদ বাপ্পি, বাঘা পৌর আলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন, বাউসা ইউনিয়ন আলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন ,পাকুড়িয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকার ও বাজুবাঘা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নিলা জামান সহ আওয়ামী সকল সহযোগী সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।

সভায় বক্তারা বলেন,স্বাধীনতার আগে আইভি রহমান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকার মধ্যদিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির বর্ণাঢ্য জীবন শুরু করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শোষিত বাংলা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি তখন ছাত্রলীগের প্রথম সারির নেত্রী এবং নীতিনির্ধারক। ১৯৬৯ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রাজনীতির প্রতি বাঙালি নারীদের আগ্রহী ও উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে তার ছিল অবিস্মরণীয় অবদান।

১৯৭১ সালে বাঙালির স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সে সময় তিনি ও তার স্বামী জিল্লুর রহমান ভারতে গিয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সবশেষে আইভি রহমান সহ বঙ্গবন্ধুর পরিবার জাতীয় চার নেতা এবং ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ২৪ জন শহীদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২২ | সময়: ৯:১০ অপরাহ্ণ | সানশাইন