১২৩ উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা : আওয়ামী লীগে আস্থা রাখুন : শেখ হাসিনা

সানশাইন ডেস্ক: দেশের মানুষের উন্নত ও সুন্দর জীবনের প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগে আস্থা রাখতে বলেছেন দলের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “নৌকায় ভোট দিয়ে দেশবাসী স্বাধীনতা পেয়েছিল। নৌকায় ভোটের কারণে আজ ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ ঘর পেয়েছে। তাই, আমি বলতে চাই- আওয়ামী লীগের প্রতি সবাইকে বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে।”
বাসস জানিয়েছে, বুধবার সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলায় বিনামূল্যের ঘর বিতরণের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানেই দেশের ১২৩টি উপজেলাকে ‘সম্পূর্ণ ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত’ ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে ১২টি জেলার সব উপজেলা ‘ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত’ ঘোষণা করা হল।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “জনগণ আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনায় দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে এবং দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে সমস্ত মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। এরপর আওয়ামী লীগ সংগ্রামের মাধ্যমে ‘জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, “এরশাদ ও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ভোট কারচুপির মাধ্যমে সংসদে এনেছিলেন। সামরিক একনায়ক জিয়া খুনিদের বিচার ঠেকাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে তাদের বিদেশে পোস্টিং দিয়েছিলেন।
“কেউ যাতে আবার ভোট চুরি করতে না পারে, সেজন্য আমরা একটি ডিজিটাল ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। বিএনপি-জামায়াত চক্র জনগণের কল্যাণে কিছুই করেনি বরং লাগামহীন দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। সেই কায়েমী গোষ্ঠী এখনও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনগণকে বন্দী করার চেষ্টা করছে, যেটি তারা ২০১৩-১৪ সালে সেই সময়ের জাতীয় নির্বাচন স্থগিত করার লক্ষ্যে শুরু করেছিল।”
বিএনপির বিরুদ্ধে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের’ ফের অভিযোগ তুলে দেশবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের একটি বিরোধী দল আছে, যারা শুধু সাধারণ মানুষকে হত্যা করে, তাদের ব্যক্তি-স্বার্থ হাসিলের জন্য সন্ত্রাস ও অগ্নিসংযোগ করে।” জনগণকে গৃহহীণ ও ভূমিহীন মুক্ত রাখার সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সমাজের বিত্তশালীদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কেউ যেন গৃহহীণ ও ভূমিহীণ না থাকে তা নিশ্চিত করা এবং অনেক ধনী লোক সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে এগিয়ে আসতে পারে যাতে সমাজের কেউ অবহেলিত না থাকে।” কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় বেসরকারি উদ্যোগে ৬৫টি গৃহহীণ ও ভূমিহীণ পরিবারকে একটি আবাসন প্রকল্পে পুনর্বাসিত করার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেন।
যারা জমিসহ বাড়ি পেয়েছেন, তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এইসব বাড়ি আপনাদের মর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করবে।” যারা বাড়ি পেয়েছেন, তাদের বাড়ির ভেতরে এবং আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাদের জন্যে তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেসব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রচেষ্টা দেখে তার আত্মা শান্তি পাবে।”
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগিসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা এবং সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। স্বামীর অমানবিক নির্যাতনে লিলি বেগম নামের এক নারীর অন্ধ হওয়ার ঘটনা শুনে, তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।


প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৩ | সময়: ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ