ধান না কিনলে বদলিও হবে না, চাকরিও যাবে না

মান্দা প্রতিনিধি :
‘জুন মাসে হিসাব ক্লোজ করা হয়েছে। গুদামে কেনা ধানের বস্তা খামাল দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে অনেক আগেই। এখন আর নতুন করে ধান কেনা যাবে না। কিনলে আবার ঝামেলার সৃষ্টি হবে। তাই ধান কেনা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ধান না কিনলে আমার বদলিও হবে না কিংবা চাকরিও যাবে না।’
ধান কেনা বন্ধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এমন মন্তব্য করেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন সরদার। এ সময় সহকারী উপ-খাদ্য পরিদর্শক বেদারুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত থেকে তাঁর এ মন্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ছিলেন।

 

 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী বলেন, ধান কেনা বন্ধ করা হয়েছে এটি সঠিক নয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামি ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালু থাকবে। ধান কেনা যাবে না ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা এমন কথা বলতে পারেন না। এটি সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী। এমন মন্তব্যের জন্য দায়ভার তাঁকেই নিতে হবে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত ২২মে প্রসাদপুর খাদ্যগুদামে চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত এ খাদ্যগুদামে মাত্র ৮১ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে প্রসাদপুর খাদ্যগুদামে ১৬৬৩ মেট্রিক টন ধান ও ৪১১ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্র ছিল। একজন কৃষক সর্বো”চ ৩ মেট্রিক টন এবং সর্বনিম্ন ১২০ কেজি ধান খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু গত দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৫ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লক্ষ্যমাত্রা পুরণের জন্য কৃষকদের সচেতন করতে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণা চলেছে উপজেলাজুড়ে। এর পরও ১০০ মেট্রিকটন ধান কেনা সম্ভব হয়নি।

 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্চুক একাধিক কৃষকের অভিযোগ, খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে হলে ‘কৃষক অ্যাপে’র মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়। সেই আবেদন কৃষি অফিস হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে যাবে। সেখানে লটারি করে কৃষক নির্বাচন করা হবে। এর পর নির্বাচিত কৃষক খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারবেন। দীর্ঘ সময়ের এসব জটিলতার কারণে কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

 

কৃষক জিল্লুর রহমানের অভিযোগ, ‘খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করার জন্য গত ১৫ জুন ‘কৃষক অ্যাপে’ আবেদন করেছি। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত সে আবেদনের লটারি হয়নি। আমি ম্যাসেজ না পাওয়ায় ধান বিক্রি করতে পারছি না।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৩ | সময়: ৪:১৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর