পাঙ্গিয়ার দীঘি পুনঃখননে কৃষিতে জেগেছে প্রাণ

স্টাফ রিপোর্টার: জনশ্রুত আছে দীর্ঘ ১০০ বছর আগে নাটোরের বড়াইগ্রামে পাঙ্গিয়ার দীঘি খনন করা হয়। কালের বিবর্তনে এই দীঘিটি মাটি-লতা-পাতায় ভরাট হলেও কাটার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। পানি ধারণ ক্ষমতা নেই বললেই চলে। মাছ চাষ ব্যাহতের পাশাপাশি কৃষিকাজে পুকুরটি কাজে আসতো না। এ অবস্থায় এই পুকুরখননের একটি প্রকল্প হাতে নেয় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প (বিএমডিএ)। পুরোদমে চলছে খননের কাজ।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প (বিএমডিএ) পুকুর পূণঃখনন ও ভূ উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ ব্যবহার প্রকল্পের আওতায় পাঙ্গিয়ার দীঘিটি পুনঃখনন হচ্ছে। এর ফলে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও কৃষি আবাদে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের (বিএমডিএ) এর তত্বাবধানে উপজেলার নগর ইউনিয়নের খিদ্রি আটাই পাঙ্গিয়ার দীঘির পুনঃখনন কাজ শুরু হয়েছে। ফলে রবিশস্য, মৎস্যচাষ, হাঁস পালন, সবজি চাষসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন তৈরি হয়েছে এলাকার উপকারভোগীদের মাঝে। এছাড়া দীঘির পানি থেকে কৃষিকাজে সেচ ব্যবস্থার কারণে ফসল উৎপাদনে সুবিধা পাবে চাষিরা। ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে দীঘিটি প্রায় ৫২ দশমিক ৭২ একর আয়তনের দিঘীটি খনন কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যার ফলে প্রায় ১৫২৫ জন উপকারভুগীরা এর সুফল পেতে যাচ্ছে।
বিএমডিএর প্রকল্প পরিচালক মো: শরিফুল হক বলেন, ৫লাখ ৪০ হাজার ৯১২ ঘন মিটারের পানি ধারন ক্ষমতা সম্পূর্ণ দীঘিটির মাধ্যমে প্রায় ৬শ’ বিঘা আবাদি জমিতে সেচ দেয়া যাবে। যার ফলে জমিতে সারা বছর ফসল ফলানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন আগে বন্যায় তারা মাঠে দুই বার চাষ করতে পারতো না। এছাড়া অনেক সময় মাঠেই ফসল নষ্ট হয়ে যেত। এখন দীঘি খননের ফলে তিনবার ফসল আবাদ করতে পারবে, ফসল নষ্টের আশঙ্কাও অনেক কমে যাবে। আর সেচ সুবিধা তো পাবেই। দীঘি খনন শেষে সোলার এলএলপি পাম্পের মাধ্যমে পানি সেচ ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও সোলারের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে তা অতিরিক্ত জাতীয়গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে। এতে একদিকে সোলারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাদের সেচ কাজ চালাতে পারবে এবং অন্যদিকে জাতীয়গ্রিডে বিদ্যুৎ সংযুক্ত হবে যা দেশের কাজে অনন্য ভূমিকা রাখবে।
আবার স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক মাছের চাহিদা পূরণ হবে। দীঘি সংলগ্ন বসবাসকারীরা হাঁস চাষ করতে পারবেন, শাক- সবজি আবাদ করে তারা আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবে। আর দীঘির পাড়ে ২০ হাজার ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছ রোপন করা হবে। যার ফলে দীঘিটি পুনঃখননে কৃষি খাতে ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।
স্থানীয় চাষি সিদ্দিক বলেন, দীঘিটি পুন:খনন করার কারণে কৃষি কাজের সুবিধার পাশাপাশি হাঁস পালন, মৎস্যচাষ,সবজি চাষে অনেক সুবিধা হবে। বন্যার পানিতে আর ফসল ফলনে ব্যাঘাত ঘটার সম্ভবনা নেই। তাছাড়া দীঘির জমে থাকা পানি ব্যবহার করে আমরা কৃষি কাজ খুব সহজেই করতে পারবো। চাষি বিজয় কর্মকার বলেন, দীর্ঘদিন পরে দীঘিটি পুনঃখননের কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে আমাদের এই এলাকার চাষিদের কৃষি কাজে অনেক সুবিধা হবে।


প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ