তরুণদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ জিকো

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রস্তুতিতে দেখা গেল অন্যরকম দৃশ্য। মজিবুর রহমান জনি ক্রস বাড়াচ্ছেন আর বক্সের বাইরে থেকে বাতাসে ভেসে থাকা বলে ভলি করছেন আনিসুর রহমান জিকো। ছয় শটের চারটি ভলিতে, একটি হেডে জালে জড়ালেন; একটি গেল উড়ে। কিন্তু ম্যাচে তো তার দায়িত্ব পোস্ট আগলে রাখা, অথচ তিনি করছেন শুটিং প্র্যাকটিস!
এই দৃশ্যটুকু যেন সোমবার বেঙ্গালুরুর স্পোর্টস হল ক্লাব মাঠে বাংলাদেশের প্রস্তুতির আবহটা বুঝিয়ে দিল। প্রস্তুতিতে জালের দেখা পেয়ে অবশ্য সতীর্থদের হাততালি পেলেন জিকো, কিন্তু চলতি বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে যে এখনও ‘ক্লিনশিট’-এর চাওয়া পূরণ হয়নি তার। শক্তিশালী লেবাননের বিপক্ষে দারুণ কিছু সেভ করলেও পরাস্ত হন দুইবার। মালদ্বীপ ম্যাচে হামজা মোহাম্মদের দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেনি। যদিও হামজার শট ফেরানোর জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিলেন কোচের প্রথম পছন্দের এই গোলরক্ষক।
মালদ্বীপ ম্যাচের জয়ের আনন্দে জিকোর ওই ‘ভুল’ যে একেবারে আড়াল হয়নি, তা প্রস্তুতির সময় জানালেন টিম ম্যানেজার আমের খান। “মালদ্বীপ ম্যাচে জিকো যে গোলটি হজম করেছে, এরপর আরেকবার ভুল করেছে, সেও উপলব্ধি করেছে দ্বিতীয় গোলটা হয়ে গেলে আমরা ম্যাচে আর ফিরতে পারতাম না। ম্যাচের প্রথম অর্ধে যদি গোল করতে না পারতাম তাহলে আমরা আর ম্যাচে ফিরতে পারতাম না। আমরা খেলা শুরু করেছি ভালো, সব কিছুই ভালো, কিন্তু গোল খেলাম। এরপর যার জন্যই হোক ম্যাচে ফিরতে পেরেছি। এভাবে প্রতিদিন ভুল হলে কিন্তু আমরা ম্যাচে ফিরতে পারব না।”
লেবাননের বিপক্ষে হারের পর গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচে ‘ক্লিনশিট’ রাখতে চেয়েছিলেন জিকো। সেটা পূরণ হয়নি তার। আগামী বুধবার ভুটানের বিপক্ষে জাল অক্ষত রাখতে মরিয়া ২৫ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। “ক্লিনশিট রাখার চাওয়া এখনও পূরণ হয়নি। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের সেমি-ফাইনালে খেলার লক্ষ্য পূরণ করার ম্যাচ। আশা করি, এই ম্যাচে আরও ভালো পারফর্ম করতে পারব।”
শেখ মোরসালিন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মজিবুর রহমান জনি, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ হৃদয়ের মতো তরুণ সতীর্থদের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে জিকোর। মালদ্বীপের বিপক্ষে বদলি নেমে জালের দেখা পান ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড মোরসালিন। লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেকের পর তৃতীয় ম্যাচে এসে গোলের খাতা খুললেন তিনি।
মাঝমাঠে বদলি নেমে আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন ১৮ বছর বয়সী জনি, ২১ বছর বয়সী হৃদয়। ২০ বছর বয়সী রফিকুল ইসলাম ও ২১ বছর বয়সী ফাহিমও আক্রমণভাগে সঙ্গ দিচ্ছেন অভিজ্ঞ রাকিব হোসেন, সুমন হোসেনকে। অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিলিত প্রচেষ্টায় এবার ভালো কিছু অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন জিকো।
“অবশ্যই ওরা (তরুণ যারা দলে আছে) অনেক ভালো। ওরা যদি নিজেদের ধরে রাখতে পারে, রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে, তাহলে অনেক দিন খেলতে পারবে। অল্প বয়সে প্রিমিয়ার লিগ খেলছে, বয়সভিত্তিক দলে খেলেছে। কাল মোরসালিন গোল করছে, ভালো খেলেছে। হৃদয় ভালো খেলছে। রফিক, জনি ওরাও ভাল করছে। আমি মনে করি আমরা উজাড় করে খেলতে পারলে দেশকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারব।”
মোরসালিনও আপাতত দ্বীপ্তিময় ফুটবল খেলার দিকে রাখছেন মনোযোগ। মালদ্বীপ ম্যাচে গোলের পর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাকে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি পাড়তেই এই তরুণ কৌতুকপূর্ণ হাসিতে বললেন, “আমি ওসব দেখি না। ফেইসবুকের খোঁজ রাখি না।”


প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩ | সময়: ৫:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ