বাসুদেবপুর স্কুলে ৫০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের ফুলতলা বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ৪টি পদে মোট ৫০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার চারঘাট ফুলতলা বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া, পিয়ন, নৈশ প্রহরী পদে ও অফিস সহকারি পদে ৪ জন প্রার্থীর কাছে থেকে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এসময় চারঘাট থানা পুলিশের উপস্থিতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ন করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানান গেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমানের আপন বড় ভাই। তারা দুই ভাই মিলে বিদ্যালয়ের ৪টি পদে নিয়োগ বাণিজ্যের প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন র্দীঘদিন যাবত। তাদের এমন কান্ডে চরম ক্ষুব্ধ ছিলো স্থানীয়রা। এর আগে বিদ্যালয়ের আয়া, পিয়ন, নিরাপত্তা প্রহরী ও অফিস সহকারি পদে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন পত্রিকায়। তবে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির পছন্দের প্রার্থীরা শুধু ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার ৪টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যক্রমের সময় এলাকাবাসী বাধা প্রদান করতে না পারে এবং কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এ জন্য থানা পুলিশের উপস্থিতিতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকা প্রার্থীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নিয়ে ৪ টি পদে নিয়োগ বাণিজ্য সম্পূর্ন হয়।
একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় বৃহস্পতিবার স্কুলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা প্রহরী পদে রামচন্দ্রপুর গ্রামের তারেকুল ইসলামকে, আয়া পদে নিয়োগ পেয়েছেন ফুলতলা বাগমারি গ্রামের রঞ্জিত কুমারের মেয়ে তিথী রানী, পিয়ন পদে নিয়োগ পেয়েছেন একই এলাকার নয়ন কুমার ও বাঘা হরিণা গ্রামের এক যুবক অফিস সহকারি পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্য নিরাপত্তা প্রহরী পদে ১০ লাখ, আয়া পদে ১০ লাখ, পিয়ন পদে ১০ লাখ ও অফিস সহকারি পদে ২০ লাখ টাকা। এসব টাকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি হাতিয়ে নিয়ে তাদের নিয়োগ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অর্থের বিনিময় বিশাল এ নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনা এলাকায় জানা জানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন তুষার তার ফেসবুকে লিখেছেন, চল্লিশ লক্ষ টাকা বাণিজ্যের মাধ্যমে নিমপাড়া ইউনিয়নের বাসুদেবপুর স্কুলের চারটি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গোপনে। গোপনে সার্কুলার দেওয়ার কারণে যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করার সুযোগ টুকুও পাইনি। যারা টাকার ভাগ নিয়েছেন তাঁরাই সামনে নির্বাচন টা করে দিয়েন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল আলমের মুঠো ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। সভাপতি আশরাফ আলী জানান, নিয়োগের সময় চারঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয় কোন কথা বলতে চাই না আপনাকে। এ বিষয় কোন কিছু জানার থাকলে স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে পারেন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয় চারঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, নিয়োগের বিষয় পুলিশের কোন দেখার বিষয় না। বৃহস্পতিবার নিয়োগ কার্যক্রমের সময় পুলিশের কোন উপস্থিতি ছিলো না বলে অস্বীকার করেন তিনি।


প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ | সময়: ৬:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ