রাজশাহীতে প্রস্তুত র‌্যাবের ৩০০ সদস্য, বাড়ানো হয়েছে, গোয়েন্দা তৎপরতা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে এবার চিহ্নিত সন্ত্রাসীও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া হত্যা, মাদক, চাঁদাবাজি, বোমাবাজি মামলার আসামিও ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এরা ভোটের মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। ঘটেছে সহিংসতাও। তবে তাঁদের গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যেই রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
মঙ্গলবার সকালে র‌্যাব রাজশাহীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে এ কথা জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, ‘মামলার আসামিরা প্রার্থী হয়েছেন- বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার যখন এসেছিলেন তখনো তোলা হয়েছিল। বলা হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাঁরা সবাই জামিনে আছেন। নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তাঁরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে তাদের কার্যক্রম র‌্যাবা নজরে রেখেছে। গোয়েন্দা তৎপরতা চালু রয়েছে। ভোটের দিন তারা সহিংসতা করতে পারবেন না।
রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, একটা ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলরের গ্রুপের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দুটি মামলাও হয়েছে। তবে সরাসরি দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি, ফলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারিনি। যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সেভাবেই হচ্ছে।
রাজশাহী র‌্যাব অধিনায়ক জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‌্যাবের প্রায় ৩০০ সদস্য মাঠে থাকবেন। মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী হিসেবে তাঁরা দায়িত্ব পালন করবেন। র‌্যাব রাজশাহীর ১৫টি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং পেট্রল, স্ট্রাইকিং ফোর্স কমান্ডারসহ ১০টি জিপ, দুটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ টিম, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দল, সুপার মোবাইল মোটরসাইকেল টিম এবং অ্যাম্বুলেন্স টিম নির্বাচনের দিন দায়িত্বে থাকবে।
এ ছাড়া যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য র‌্যাব রাজশাহীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে। র‌্যাব সদর দফতরে র‌্যাবের স্পেশাল ফোর্স হেলিকপ্টারসহ যেকোনো পরিস্থিতিতে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি তদারকির জন্য নির্বাচন সেল ও কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। শহরে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হচ্ছে। ২২ জুন পর্যন্ত র‌্যাবের এসব কার্যক্রম বলবৎ থাকবে বলেও জানান রিয়াজ শাহরিয়ার।
এই নির্বাচনে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে অথবা সহিংসতা বা নাশকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে র‌্যাব কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জানিয়ে রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী অথবা সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার নন-এ রকম নাগরিকদের নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ অথবা ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে অনুপ্রবেশকারী কোনো ব্যক্তির অপতৎপরতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে দমন করবে।
র‌্যাবের অধিনায়ক বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্রের ব্যাপারে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করেছি। নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ অনুযায়ী নির্বাচন চলাকালে সব নাগরিককে কোনো ধরেনর লাইসেন্সধারী অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন না করার জন্য কঠোরভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। নির্বাচন চলাকালীন প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র বহন করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেট কোনো সহযোগিতা চাইলে র‌্যাব দ্রুততম সময়ে সাড়া দেবে।


প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৩ | সময়: ৪:১৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ