পারেদেস-রোমেরোর গোলে আর্জেন্টিনার জয়

স্পোর্টস ডেস্ক: নিয়মিতদের অনেককে ছাড়া নেমেও ম্যাচ জুড়ে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরাল আর্জেন্টিনা। মাঝেমধ্যে দুয়েকটি ঝলক দেখালেও সত্যিকার অর্থে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কোনো চ্যালেঞ্জ জানাতে পারল না ইন্দোনেশিয়া। অনায়াস জয় তুলে নিল লিওনেল স্কালোনির দল।
জাকার্তায় সোমবার আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে তিনবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা। প্রথমার্ধে লেয়ান্দ্রো পারেদেস চমৎকার গোলে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান ক্রিস্তিয়ান রোমেরো। কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর এই নিয়ে চার ম্যাচ খেলে প্রতিপক্ষের জালে ১৩টি গোল করল আর্জেন্টিনা, বিপরীতে একটিও হজম করেনি তারা।
লিওনেল মেসি, আনহেল দি মারিয়া, নিকোলাস ওটামেন্দিকে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে বিশ্রাম দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ। গত বৃহস্পতিবার বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারানো ম্যাচ থেকে একাদশে মোট সাতটি পরিবর্তন আনেন স্কালোনি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে দুই দলের প্রথম সাক্ষাতে শুরু থেকে বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য করা আর্জেন্টিনা চতুর্দশ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায়। হুলিয়ান আলভারেসের থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জিওভানি লো সেলসোর প্রচেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ইন্দোনেশিয়ার গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন নিকোলাস গনসালেস। এই ফরোয়ার্ডের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক আরি।
২৯তম মিনিটে আর্জেন্টিনার গোল না পাওয়াটাই ছিল বিস্ময়কর। ইন্দোনেশিয়ার বক্সের মাথায় তাদের এক খেলোয়াড় বলের নিয়ন্ত্রণ হারালে পেয়ে যান অভিষিক্ত ফাকুন্দো বুনানোত্তি। এই মিডফিল্ডারের গোলরক্ষককে কাটিয়ে নেওয়া শট গোললাইন থেকে ফেরান এক ডিফেন্ডার। ফিরতি বলে আলভারেসের শটও প্রতিহত হয় রক্ষণে।
অবশেষে ৩৮তম মিনিটে পারেদেসের চোখধাঁধানো এক গোলে ‘ডেডলক’ ভাঙে আর্জেন্টিনা। ৩০ গজের বেশি দূর থেকে ডান পায়ের বুলেট গতির শটে ওপরের কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ইউভেন্তুসের মিডফিল্ডার। একটু পর বুনানোত্তির থ্রু বল ডান দিকে খুঁজে পায় আলভারেসকে। দুরূহ কোণ থেকে ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা পাশের জালে লাগে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বড় সুযোগ পায় ইন্দোনেশিয়া। সতীর্থের কাট-ব্যাকে বক্সের ভেতর থেকে আইভার ইয়েনেরের শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। প্রথমার্ধে গোলের জন্য স্বাগতিকদের একমাত্র শট এটিই। বিপরীতে ১৫টি শট নিয়ে ৪টি লক্ষ্যে রাখে আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে আরেকটি দুর্দান্ত সেভ করেন মার্তিনেস। লম্বা থ্রো-ইন থেকে বক্সের ভেতরে একান বাগোতের হেড শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে এক হাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গত বিশ্বকাপের গোল্ডেন গ্লাভস জয়ী। দুই মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। লো সেলসোর কর্নারে বক্সে লাফিয়ে হেডে গোলটি করেন ডিফেন্ডার রোমেরো।
বাকি সময়েও যথারীতি আক্রমণে আধিপত্য ধরে রাখে সফরকারীরা। দ্বিতীয় গোলের পর গনসালেসের বদলি নামা আলেহান্দ্রো গার্নাচো যোগ করা সময়ে ভালো একটি সুযোগ পান। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই ফরোয়ার্ডের শট ফিরিয়ে ব্যবধান আর বাড়তে দেননি স্বাগতিক গোলরক্ষক। ম্যাচে আর্জেন্টিনার একক আধিপত্যের প্রমাণ মেলে পরিসংখ্যানেও। ৭৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য মোট ২১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে তারা। ইন্দোনেশিয়ার পাঁচ শটের দুটি লক্ষ্যে ছিল।


প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ | সময়: ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ