ভোটের মাঠে লড়াইয়ে সক্রিয় লিটন

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে এখন প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিহীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মাঠ। এবারের নির্বাচনে বিএনপি আসেনি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্র্থর্াী হিসেবে জাপা, জাকের পার্টি ও ইসলামী আন্দোলের প্রার্থী অংশ নিয়েছেন।
লিটন বাদে এবারের নির্বাচনে এখনো ভোটারদের কাছেই পরিচিত হতে পরেন নি জাপা প্রাথী সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার। ভোটের মাঠেও নেই তারা। আলোচনাতেও আসেনি তাদের নাম। লিফলেট পোস্টারও দেখা যায়নি। এমননি মাইকেও শোনা যাচ্ছে না তাদের প্রতিকের আওয়াজ।
তবে শুরু থেকে বিএনপির অনুপস্থিতির কারনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারকী কিছুটা আনোচনায় আসলেও সোমবার বরিশালে তাদের নেতার ওপর হামলার জেরে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় মাঠে প্রার্থী বলতে রইলেন শুধু আওয়ামী লীগের খায়রুজ্জামান লিটন।
রাজশাহীর মাঠজুড়ে এখন শুধু লিটনের প্রচার। পোস্টার, লিফলেট ব্যানার আর ফেস্টুসে চারিদিকে লিটনের নৌকার স্লোগান। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীহীন হলেও এক মুহুর্ত বসে নেই লিটন। নির্বাচনী উৎসব ও আমেজ সৃস্টি করেছেন তিনি। সকাল থেকে রাত অবধি অবিরাম ছুটে চলেচের ভোটারদের কাছে। আধুনিক ও স্মার্ট রাজশাহী গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। তার বিগত ৫ বছরের উন্নয়নের চিত্র মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছেন। চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকায় ভোট প্রার্থণা করছেন তিনি। শুধু লিটন নয়, তার পক্ষে রাজশাহী নগরীর ৩০ টি ওয়ার্ডের মাঠে মাঠে নৌকার শক্ত আওয়াজ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে পেশাজীবীরা। তারা বলছেন, এবারের নির্বাচনকে তারা হেলা করছেন না। শক্তভাবেই মোকাবেলা করতে চান।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ভোট তো ভোটই। এ ভোটে কে এলো, কে এলোনা সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়। নির্বাচনকে সিরিয়াস হিসেবে নিয়েই মাঠে সোচ্চার রয়েছেন তারা। মানুষকে ভোটমুখি করতেও তারা মাঠে সমানে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী আর বসে নেই। দিনের শুরুতে নানা শ্রেণীর পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও কর্মপন্থা ঠিক করছেন। আর বিকেলে শুরু করছেন মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে গণসংযোগ।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকেই অবিরাম রয়েছে মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও আওয়ামী লীগ। প্রতিদিনের রুটিং অনুযায়ী ভোটের মাঠে নামছেন তিনি। যেখানে যাচ্ছেন ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। জয়ের ব্যাপারে এখন লিটন পুরোপুরি নিশ্চিত এটি সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ফিরলেও মাঠে অবহেলা করছেন না লিটন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এখন ভোটে মানুষের অংশ গ্রহণনই বড় চ্যালেঞ্জ। সাধারণ মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে আসেন, ভোট দেন সে পরিকল্পনা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছেন। লিটনের আবারো জয়ের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নিশ্চিত হলেও এখন ভোটের ব্যবধান নিয়ে ভাবছেন তারা। আওয়ামী লীগ মনে করছে এবারের নির্বাচনে তারা কমপক্ষে ৭০ ভাগ ভোটার উপস্থিতি চান কেন্দ্রে। সে অনুযায়ী কাজ করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে মোট ভোটের একটি বড় অংশ রয়েছে বিএনপি-জামাতের। তারা যদি ভোট কেন্দ্রে না যায় তবে ভোটের অংক কমে যাবে। এ কারণে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে নারী ও তরুন ভোটারদের এবার আগ্রহী করতে তুলতে কাজ করছে রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ।
তবে সাধারণ মানুষ বলছেন, রাসিক নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের ধারেকাছে দাড়ানোর যোগ্যতা নেই অপর প্রার্থীদের। তাই তারা নাম মাত্র ভোটে অংশ নিয়েছেন। ভোটের মাঠে তাদের তেমন উপস্থিতি নেই। ভোটারদেরর তাদের নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। তবে তারা বলছেন যেহেতু রাজশাহীর সবকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে তাই তাদের কারণে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।
রাজশাহীতে মেয়র পদে অংশ নেওয়া চারজনের একজন ইতিমধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী ঘোষণা দিয়ে ভোটের মাঠ ছেড়েছেন। অপর দুজনের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ারেরও রাজশাহী নগরে কোনো অস্তিত্ব নেই।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার কাঁচাবাজারে গণসংযোগ করেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এসময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর ভোট বর্জনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের নির্বাচন করার মানসিকতা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা উচিত ছিল। কেন সরে গেল সেটা তারাই বলতে পারবে। তারা নির্বাচন বর্জন করলেও তাদের মার্কা তো থেকেই যাচ্ছে। কাজেই তাদের মার্কাতে যারা ভোট দেওয়ার তারা দেবে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে আছেন। তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হওয়ার কোন কারণ নাই। তারা নিশ্চয় তাদের প্রচার-প্রচারণা বাড়াবেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার নির্বাচনে চারজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ৩০টি ওয়ার্ডে ১১১জন কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। তবে ২০নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর রির্বাচিত হয়েছেন। রাজশাহী সিটিতে ভোটার সংখ্যা ৩লাখ ৫১হাজার ৯৮২জন। ভোটকেন্দ্র ১৫৫টি।


প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩ | সময়: ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ