নগরীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে এক হাজার ৪৬৫ কোটির প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার: মহাসড়কগুলো পরিষ্কার। কোথাও বড় কোন ময়লার স্তুপ পড়ে নেই। নেই কোন দুর্গন্ধ। কোন ব্যক্তির হাত দিয়ে যাতে রাস্তাঘাট নোংড়া না হয় সে দিক দিয়ে নগরবাসী সচেতন। এমন চিত্র দেখে আগন্তÍকরা প্রেমে পড়ে যায় এই শহরে। রাজশাহী মহানগরী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দীর্ঘদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে রাজশাহী মহানগরীর এ চিত্র এখন সবখানেই প্রশংসা পাচ্ছে।
পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ দিয়ে রাজশাহী মহানগরীকে গড়ে তুলতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এক হাজার ৪৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ‘রাজশাহী মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি পাঠিয়েছিলেন সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি এ প্রকল্পটি বাস্তবে রূপ দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। রাজশাহী মহানগরী হয়ে উঠবে আরো পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরী।
পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে রাজশাহীর সুনাম দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এশিয়ার মধ্যে অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহরের সুনাম অর্জন করেছে রাজশাহী মহানগরী। পরিকল্পিত উন্নয়ন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশের ব্যাপক উন্নয়নে এই সুনাম অর্জন।
২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়েছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
তাঁর আধুনিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এসেছে আমূল পরিবর্তন। রাস্তার পাশে যাতে কোন ময়লা-আবর্জনা না থাকে সেজন্য নগরীতে ১২টি আধুনিক সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে পূর্বের ন্যায় যেখানে যেখানে দেখা মিলে না ময়লা-আবর্জনা। এদিকে নগরীতে আরো ৫টি এসটিএস নির্মাণ কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে এসটিএস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে রাসিকের।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, একটি পরিচ্ছন্ন মহানগরী গড়ে তোলার জন্য প্রথম মেয়াদে ১ জুলাই ২০০৯ সালে রাত্রীকালীন বর্জ্য আবর্জনা অপসারন কার্যক্রম চালু সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি।
মহানগরবাসী এর সুফল পেয়েছে। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণকে উদ্ধুদ্ধকরণ ও জনসচেতনা সৃষ্টি, বাড়ি বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ, রাতে ও দিনে রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করা, ৩০টি ওয়ার্ডে নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার ও কাদামাটি উত্তোলন, বিনামূল্যে ডাস্টবিন প্রদান ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। যার ফলে রাজশাহী একটি পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে দেশে ও বিদেশে প্রশংসনীয় স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
এছাড়া পরিবেশ উন্নয়ন ও নাগরিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে আনতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সকল ক্লিনিকের আউট হাউজ মেডিকেল বর্জ্য পরিবেশসম্মত ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। সে মোতাবেক প্ল্যান্টের ভৌত অবকাঠামো ইতিমধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কর্মচারীরা মেডিকেল ও ক্লিনিক থেকে কার্ভাড ভ্যান দ্বারা বর্জ্য সংগ্রহ করে প্ল্যান্টে নিয়ে গিয়ে সেখানে পরিশোধন ও অপসারণ করছে।
এ বিষয়ে রাসিকের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা আর পরিশ্রমে রাজশাহীকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে মহানগরীতে ১২টি আধুনিক এসটিএস নির্মাণ করে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরো ৫টি এসটিএস নির্মাণাধীন। আগামীতে প্রতিটি ওয়ার্ডে এসটিএস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া এক হাজার ৪৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ‘রাজশাহী মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আমি আগামীতে নির্বাচিত হলে রাজশাহীকে আরো পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করবো।


প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩ | সময়: ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ