সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ : রাবি শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার : সহকর্মীকে যৌন হয়রানি ও অশোভন আচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। ‘নারী নির্যাতন ও সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটি, রাজশাহী’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত এ মানববন্ধন থেকে ওই শিক্ষককে সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দাবি জানানো হয়।
এর আগে গত ২৩ মে যৌন হয়রানির বিচার চেয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি মাহবুবা কানিজ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে মাহবুবা কানিজ উল্লেখ করেন, গত ২১ মে দুপুরে বিভাগীয় সভাপতির অফিসকক্ষে ওই অধ্যাপক বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে অশোভন ভাষা ও যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেন। এরপর ২৩ মে একাডেমিক কমিটির সভা হয়। সভা শেষে বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে মাহবুবা কানিজ ওই শিক্ষকের সঙ্গে সেদিন যে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকার জন্য ওই অধ্যাপককে বলেন। এতে তিনি আবারও অশোভন আচরণ করে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। পরে তিনি উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষক হলেন মানুষ গড়ার কারিগর। তিনি মানবিক মানুষ গড়বেন, সুন্দর-নৈতিক আচরণ শেখাবেন। কিন্তু এনামুল হক যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জার। এটি শিক্ষা নগরীর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষা জানা নেই। তিনি সহকর্মীকে ‘সহকর্মী’ হিসেবে না ভেবে একজন ‘নারী’ হিসেবে ভেবেছেন। আর এ জন্যই তিনি এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মানববন্ধনে এনামুল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বক্তারা। আর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, এই শিক্ষককে এখনই একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে হবে। সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। তা না হলে এই ঘটনার প্রতিরোধ এবং প্রতিবাদে আন্দোলন চলবে।
মহিলা পরিষদের রাজশাহী জেলার সভাপতি কল্পনা রায়ের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক আঞ্জনা সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কবিকুঞ্জের সভাপতি রুহুল আমিন প্রামানিক, রাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শুভ্রা রানী চন্দ, মহিলা আইনজীবী সমিতির বিভাগীয় সভাপতি দিল সেতারা চুনি, বীর মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান আলী শাজাহান, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের বিভাগীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান খন্দকার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ রিপন, শিক্ষক নেতা শফিকুর রহমান বাদশা প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার চরিত্র হনন করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এ অভিযোগ করা হয়েছে। এর কারণ, সেদিন নিয়মবহির্ভূতভাবে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল এবং সেই সভা আয়োজনের বিপক্ষে আমি কথা বলেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বিভাগেই যেন নিষ্পত্তি করা হয়, সে জন্য বিভাগের নয়জন শিক্ষক উপাচার্য এবং বিভাগীয় সভাপতির কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।’


প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৩ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ